× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ডিমের বাজার

কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ায় সিন্ডিকেট

অরুপ রতন, বগুড়া

প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:০৪ পিএম

আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:১০ পিএম

কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ায় সিন্ডিকেট

বগুড়ায় সিন্ডিকেটের কবলে ডিমের বাজার। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ডিলাররা ১১ টাকা দরের প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছেন ১৩ টাকায়। হাতবদলেই প্রতি ডিমে দুই থেকে আড়াই টাকা দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ ক্রেতারা। তবে ডিলারদের দাবি, আমদানি কম হওয়ায় বেড়েছে ডিমের দাম। আর বাজার নিয়ন্ত্রণে গতানুগতিক আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ডিমের বাজার ঘুরে জানা গেছে, বগুড়ায় কাজী ফার্ম, নারিশ, নাবিল, ভিআইপি, সিপি বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানি স্থানীয় খামারি ব্যবসায়ীদের কাছে ডিম সরবরাহ করে থাকে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম কাজী ফার্ম। কাজী ফার্মই ডিমের বাজার অলিখিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। তারাই ডিমের দর বেঁধে দেয়, কোন প্রতিষ্ঠানে কতগুলো ডিম যাবে, কোথায় ডিম সরবরাহ করা হবে, তা নির্ধারণ করে। গত কয়েক দিন কাজী ফার্মের কাছ থেকে ডিলার ও পাইকাররা প্রতি পিস ডিম কিনছেন ১১ টাকা ১ পয়সা দরে। কিন্তু ডিলাররা পাইকারি বাজারে সব ধরনের প্রতি পিস ডিম ১৩ টাকা দরে ৫২ টাকা হালিতে বিক্রি করছেন।

বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, ডিমের বাজারে সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই। কারণ বগুড়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও দ্বিগুণ ডিম উৎপাদন হচ্ছে। 

শাহীনুর ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘গত সপ্তাহে ৪৮ টাকা হালি ডিম কিনেছি। আজ (শনিবার) শুনি ডিমের হালি ৫২ টাকা। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।’

নিলুফা ইয়াসমিন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘পাইকারি বাজারে এসে ১৩ টাকা দরে ডিম নিলাম। বাড়ির পাশের দোকানে প্রতি পিস ডিম ১৪ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।’

ডিমের আড়তদার প্রতিষ্ঠান সেলিম এন্টারপ্রাইজের পরিচালক সেলিম রহমান বলেন, ‘গরমের কারণে ডিমের উৎপাদন কমে গেছে। যে কারণে এখন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আমরা যেমন পাচ্ছি তেমন সরবরাহ করছি।’

ফরহাদ সরকার নামে এক ডিলার বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় কম ডিম পাচ্ছি। ফলে ছোট-বড় সকল সাইজের ডিম এক রেটেই বিক্রি হচ্ছে। মূলত ফার্ম থেকে ডিম বগুড়ার বাইরে পাঠানোর কারণে ডিমের বাজারে দাম কমছে না।’ 

উর্মি ডিম ঘরের মালিক উত্তম বলেন, ‘ডিলাররাই মূলত সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। তারা ফার্ম থেকে ১১ টাকা ১ পয়সা দরে ডিম কিনে আমাদের কাছে সাড়ে ১২ টাকায় বিক্রি করছে। আমাদের বাধ্য হয়ে সেই ডিম ১৩ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। লাভ না করলে তো ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।’

বগুড়া ডিমঘরের প্রোপ্রাইটর রতন মণ্ডল বলেন, ‘কাজী ফার্ম থেকে গত কয়েক দিন ধরেই প্রতি পিস ১১ টাকা ১ পয়সায় ডিম কিনেছি। তবে ডিমের পরিমাণ কম। আগে দিনে গড়ে ৪ হাজার ডিম পেতাম এখন ডিম সংকটের কারণে ২ হাজার পিস ডিম পাচ্ছি। ডিম ওই দামে কিনলেও সব খরচ মিলে পড়ে যায় প্রতি পিস ডিম প্রায় ১২ টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রামের ডিম আসলে দাম স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।’

বগুড়া কাজী ফার্মসের আঞ্চলিক বিক্রয় ম্যানেজার মহিব্বুল ইসলাম হিরণ বলেন, ‘বগুড়ার নন্দীগ্রাম ফার্ম থেকে ডিম আসে। এক মাস আগে প্রতিদিন চার থেকে সাড়ে চার লাখ ডিম উৎপাদন হতো। এখন প্রতিদিন ২ লাখ ৫ হাজার ২০০ পিস ডিম উৎপাদন হচ্ছে। আমাদের উৎপাদন কমে গেছে। তবুও আমরা বগুড়ার বাজারে প্রতিদিন ডিম সরবরাহ করে যাচ্ছি। আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্যেই ডিলারদের ডিম দিচ্ছি। তারা যদি বেশি দামে বিক্রি করে তার দায়ভার আমরা নিতে পারি না।’

বগুড়া সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা ডিম বিক্রি করি না। স্থানীয় খামারিদের নিয়ে কাজ করি। খামারিদের সঙ্গে আমাদের কন্ট্রাক্ট, আমরা রেডি মুরগি দিই আর ওরা আমাদের কাছ থেকে খাদ্য নেয়। এই খাদ্যের পরিবর্তে ওরা ডিম বিক্রি করে আমাদের টাকা দেয়।’

বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোছা. নাছরীন পারভীন বলেন, ‘জেলায় ডিমের উৎপাদনে ঘাটতি নেই। এ অর্থবছরে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তারচেয়েও দ্বিগুণ পরিমাণে ডিম উৎপাদন হচ্ছে। ফলে বগুড়ায় উৎপাদিত ডিম অন্যান্য জেলাতেও পাঠানো হয়।’ 

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমরা ডিমের বাজার তদারকি করে আসছি। কেউ যদি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা