উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
ইউসুফ আহমেদ, লালমোহন (ভোলা)
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:০৩ পিএম
৫০ শয্যাবিশিষ্ট ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রবা ফটো
৫০ শয্যাবিশিষ্ট ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পুরো উপজেলাবাসীর চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসাস্থল এটি। গড়ে প্রতিদিন এখানে কেবল ভর্তি রোগীই থাকেন ৭০-৮০ জন। আবার কখনও কখনও এ সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় শতাধিক। তবে বিদ্যুৎ যাওয়ার পর এসব রোগী, চিকিৎসক ও নার্সদের চরম বিপাকে পড়তে হয়।
বিদ্যুৎ যাওয়ার পর এখানে বিকল্প হিসেবে রয়েছে জেনারেটর এবং আইপিএসের ব্যবস্থা। তবে আইপিএসটি নষ্ট। আর জেনারেটরের তেলের বরাদ্দ না থাকায় তাও চালানো হচ্ছে না। এতে করে বিদ্যুৎ গেলে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার। এ নিয়ে তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। দিনের বেলায় অসহনীয় গরমের মধ্যে থাকতে হয়। আর রাতের বেলায় বিদ্যুৎ গেলে এ দুর্ভোগ যেন সীমা ছাড়ায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে লালমোহনে গত বেশ কিছু দিন ধরে চরম বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে রাতের বেলায় মোবাইলের লাইট আর মোমবাতি জ্বালিয়ে চিকিৎসা দেন চিকিৎসকরা। এই দুর্ভোগ নার্সদের আরও বেশি। কারণ চিকিৎসক রোগীকে ভর্তি দিলে তারা যান নার্সদের কাছে। এ সময় তারাও মোবাইলের লাইট এবং মোমবাতির আলোতে রোগীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন নার্স এবং মিডওয়াইফ বলেন, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে এখানে চাকরি করছি। চাকরির প্রথম থেকেই দেখছি বিদ্যুৎ যাওয়ার পর অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে। যার জন্য কখনও মোবাইলের টর্চ, আবার কখনও মোমবাতির আলোতে রোগীদের ক্যানোলা পরানোসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র প্রস্তুত করি। এমনকি বিদ্যুৎ যাওয়ার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা প্রসূতি মায়েদের মোবাইলের টর্চ বা মোমবাতির আলোতে প্রসব করাতে হয়। এমন দুর্ভোগের কথা এখানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বারবার জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। বছরের পর বছর গেলেও এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন চিকিৎসক জানান, দিনের বেলায় বিদ্যুৎ গেলে সহ্য করতে হয় অসহনীয় গরম। আর রাতের বেলায় গেলে গরমের যন্ত্রণার পাশাপাশি চিকিৎসাসেবায়ও মারাত্মকভাবে ব্যাঘাত ঘটে। অথচ এখানে জেনারেটরের ব্যবস্থা আছে, রোগীদের সেবায় এত দুর্ভোগের পরও সেটি চালু করা হচ্ছে না। এ ছাড়া আইপিএস থাকলেও সেটি পুরোনো হয়ে যাওয়ায় কয়েক দিন পরপর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৈয়বুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ যাওয়ার পর বিকল্প হিসেবে জেনারেটর থাকলেও সরকারিভাবে তেলের বরাদ্দ নেই। বরাদ্দের জন্য বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তবে তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি। যার জন্যই জেনারেটরটি চালানো যাচ্ছে না। এ ছাড়া আইপিএসটি কয়েক দিন আগেও ঠিক করা হয়েছে। আবারও নষ্ট হয়ে গেছে, শিগগির তা ঠিক করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।