মাগুরা সদর হাসপাতাল
শরীফ স্বাধীন, মাগুরা
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:২০ পিএম
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:২৯ পিএম
মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অন্যান্য রোগীর সঙ্গে ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সাধারণ রোগীরা। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য করা হয়নি আলাদা ওয়ার্ড। বুধবার (২৫ সেপে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত আগস্ট ও চলতি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫৪ জন। ইতোমধ্যে ৪৭ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে সাতজন রোগী ভর্তি আছে। সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসক রয়েছেন পাঁচজন, আর শয্যা সংখ্যা ৪৫টি।
হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, নতুন ভবনের পাঁচতলায় সাধারণ ওয়ার্ডে সাতজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছে। আলাদা ওয়ার্ড না থাকায় অন্য রোগীদের সঙ্গেই তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত বেড না থাকায় এসব রোগীর কেউ কেউ মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত কোনো রোগীকে মশারির মধ্যে থাকতে দেখা যায়নি। রোগীরা বলছে, আমাদের মশারি টাঙাতে হবে, এ ব্যাপারে কেউ কিছু বলেনি। তবে সাধারণ রোগীদের দাবি, আলাদা ওয়ার্ড করে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে তাদের ঝুঁকিমুক্ত রাখা উচিত।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল হলেও সেটা এখনও খাতা-কলমেই। প্রকৃত অর্থে এখানে ১০০ শয্যা দিয়েই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে। যে কারণে আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড করা সম্ভব হয়নি।
শালিখা উপজেলার ধনেশ্বরগাতি গ্রামের আমিরুল ইসলাম বলেন, আমি ১৪ দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি গত মঙ্গলবার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানতে পারি ডেঙ্গু হয়েছে। তবে মশারি টাঙানোর ব্যাপারে নার্সরা কেউই আমাকে বলেননি।
শহরের ভাইনা এলাকার ঝন্টু খান বলেন, পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখানে এসে ডেঙ্গু আক্রান্ত না হই, সেই আতঙ্কে আছি। কারণ তারা মশারি ব্যবহার করছে না।
হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স মোবাশ্বের বেগম বলেন, রোগীর সংখ্যা বাড়লে মেঝেতে বেড পেতে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনও আলাদা কোনো ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু করতে পারেনি। তাই সাধারণ রোগীদের সঙ্গে ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছি।
সাধারণ ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসক দেবাশীষ বিশ্বাস জানান, বছরের এই মুহূর্তে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জায়গা সংকুলন না হওয়ায় সাধারণ রোগীদের সঙ্গেই তাদের রাখা হচ্ছে। রোগীদের মশারির মধ্যে থাকতে বলা হলেও তারা শোনেন না। এতে সাধারণ রোগীদের ডেঙ্গু আক্রান্তের ঝুঁকি থেকেই যায়।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহসিন উদ্দিন বলেন, অনেকটা বাধ্য হয়েই সাধারণ ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের নতুন এবং পুরাতন ভবন থাকলেও পুরাতন ভবনে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চলছে। সঙ্গত কারণেই ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা ওয়ার্ড করা যাচ্ছে না। অন্যান্য রোগী ঝুঁকিমুক্ত রাখতে ডেঙ্গু রোগীদের মশারির মধ্যে থাকার পরামর্শ দিলেও তারা সেটা মানছেন না।