চাটমোহর পৌরসভা
সঞ্জিত চক্রবর্তী, চাটমোহর (পাবনা)
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৪৪ এএম
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৫৩ এএম
সড়কের স্থানে স্থানে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত রয়েছে। সেখানে অল্প বৃষ্টিতে জমে যায় পানি। সম্প্রতি চাটমোহর পৌরসভার বালুচর মাঠ সংলগ্ন এলাকা। প্রবা ফটো
অসংখ্য খানাখন্দে ভরা পাবনার চাটমোহর পৌরসভার প্রধান সড়ক। নামে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না পৌরবাসী। বিশেষ করে পৌরসভার প্রধান সড়ক নিয়ে দুর্ভোগের শেষ নেই পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহন চালকদের। থানা মোড় থেকে নতুন বাজার জার্দিস মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানায়, একটু বৃষ্টিতেই সড়কের খানাখন্দে পানি জমে। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। নষ্ট হয় যানবাহন। দুর্ভোগ বাড়ে পথচারী, যাত্রীসাধারণসহ চালকদের। দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি কোনো শহরের প্রধান সড়ক। অসংখ্য খানাখন্দে চলাচলই যেন দায়। বাধ্য হয়েই এই সড়কে প্রতিনিয়ত চলাচল করে হাজারো মানুষ ও যানবাহন। গত ১০ বছরেও সড়কটি কোনো সংস্কার করা হয়নি।
রনি রায় নামে পৌর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, নামেই প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। কিন্তু কোনো কাজে নেই। প্রধান সড়কটি এত ভাঙাচোরা যে চলাচলই দায়। এ ছাড়া কোনো উন্নয়ন বা সংস্কার নেই। আব্দুল মান্নান পলাশ নামে আরেকজন বলেন, আমরা পরিবর্তন চেয়েছিলাম, যে আশা নিয়ে মেয়র নির্বাচিত করেছিলাম, সে আশা পূরণ হয়নি। বৃষ্টি হলে সড়কে চলা যায় না। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
আব্দুল করিম নামে এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, হোটেলের সামনে সড়কে সবচেয়ে বেশি ভাঙা। বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধ হয়ে থাকে। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাতায়াতে চরম সমস্যায় পড়ে। ১০ বছরেও সড়কটিতে উন্নয়ন হয়নি। আমরা চাই দ্রুত সড়কটি সংস্কার করা হোক।
অটোভ্যান চালক আব্দুল মজিদ বলেন, এই সড়কে আর গাড়ি চালাতে ইচ্ছা করে না। একবার যাওয়া-আসা করলে শরীরের সব জয়েন্টে ব্যথা হয়ে যায়। আর গাড়ি তো প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে। তিন দিনে যা কামাই করি, একবার মেরামত করতেই শেষ।
চাটমোহর পৌরসভার সাবেক মেয়র সাখাওয়াত হোসেন সাখো বলেন, ‘আমি দায়িত্বে থাকতেই টেন্ডার হয়ে গেছে। ঠিকাদারকে কার্যাদেশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাজও শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই দেশের পরিস্থিতির কারণে থমকে গেছে কাজটি।’
পরে খোঁজ নিয়ে পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি সংস্কারে যৌথভাবে কাজ করছে সিরাজুল ইসলাম এন্টারপ্রাইজ ও রাসেল এন্টারপ্রাইজ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান। আরসিসি ঢালাইয়ের সড়কটির উভয় প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ৫০ মিটার করে শিডিউল অনুযায়ী কাজ করার কথা। যার প্রস্থ ১০ ফুট (৩ মিটার)। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
সিরাজুল ইসলাম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সিরাজুল ইসলাম জানান, কার্যাদেশ অনুযায়ী গত আগস্ট থেকে কাজ শুরু হয়ে আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ করার কথা। কিন্তু ইট না পাওয়ার কারণে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে আশা করছি ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই কাজ শুরু করতে পারব।
পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল বলেন, বারবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চাপ দিচ্ছি। কিন্তু তারা কাজের জন্য পর্যাপ্ত ইট পাচ্ছে না বলে জনিয়েছে।
১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত চাটমোহর পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয় ২০১৮ সালে। মোট জনসংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। পৌরসভায় মোট পাকা সড়ক আছে ২৩ দশমিক ৯৭৫ কিলোমিটার।