ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন
রংপুর অফিস
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:২৩ পিএম
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪ এএম
ছাত্র আন্দোলনে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ছবি : সংগৃহীত
ছাত্র আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কানের ওপরের দিকে মাথার খুলিতে দৈর্ঘ্যে ৩ ইঞ্চি ও প্রস্থে দেড় ইঞ্চি আয়তনের গর্ত ছিল, যেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং রক্ত জমাট বাঁধা ছিল। এ ছাড়া বুক, পেট, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছোট ছোট রাবার বুলেটের গর্ত ছিল। সেখান থেকেও প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। মাথার আঘাত, শরীরের রক্তক্ষরণের কারণে আবু সাঈদ শকে চলে যায়। এতে তার মৃত্যু হয়।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমের হাতে আসা আবু সাঈদের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। এর আগে গত ১৬ জুলাই রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এটিকে হোমিসাইডাল বা হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী আবু সাঈদের মাথায় আঘাতে একটি বড় গর্ত হয়েছিল। বুলেটের আঘাতে মৃত্যু হলে বুলেট তার মাথার এক প্রান্তে লেগে অন্য প্রান্ত দিয়ে বের হয়ে যেত। যেহেতু এমনটি ময়নাতদন্তে উল্লেখ নেই, তাহলে এটি কোনো ঢিলের আঘাতে হতে পারে, বুলেটের আঘাতে নয়।
এ ব্যাপারে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এ ঘটনায় ১৮ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাজহাট আমলী আদালতে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী ১৬ জনের নামে এবং অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসআই মো. আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। ১০ সেপ্টেম্বর পিবিআই তাদের দুজনের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। আবু সাঈদ হত্যা মামলায় নতুন করে আর কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়িত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিতকরণ ও শাস্তির ধরন নির্ধারণের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তদন্ত কমিটিতে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান আহ্বায়ক, একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আমির শরীফ সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।