গাইবান্ধায় সড়ক
রিপন আকন্দ, গাইবান্ধা
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:০১ পিএম
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:০২ পিএম
গাইবান্ধা সদর উপজেলার দক্ষিণ ধানঘরায় সড়কের মাটি সরে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রবা ফটো
গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সড়ক নির্মাণের কয়েক দিনের মধ্যেই ধসে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী এবং নিয়ম না মানার ফলে রাস্তার এই দুরবস্থা তৈরি হয়েছে। পিআইও অফিস সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মেরামতের জন্য দফায় দফায় যোগাযোগ করা হলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি আজও।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এক হাজার মিটার এইচবিবি (হেরিং বোন বন্ড) রাস্তা নির্মাণের কাজ পেয়েছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পলক অ্যান্ড পায়েল ট্রেডার্স। এর মধ্যে বল্লমঝাড় ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ধানঘড়ায় ৭০০ মিটার এবং খোলাহাটি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে ৩০০ মিটার রাস্তা নির্মাণের কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে প্রকল্পের মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পলক অ্যান্ড পায়েল ট্রেডার্স কাজটি না করে এসএম এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার শুক্কুর আলীর মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করে।
সরেজমিন দক্ষিণ ধানঘরা গ্রামের ৭০০ মিটার অংশে দেখা যায়, রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ইট ধসে পড়েছে এবং অনেক স্থানে গভীর ফাটল দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে পুকুরের পাশে থাকা রাস্তার সাইডওয়াল ভেঙে গেছে। কিছু স্থানে মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া ইট বিছানোর পর ঠিকভাবে বালু না দেওয়ায় বেশিরভাগ জায়গায় ইটগুলো নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাস্তার কাজ অত্যন্ত দায়সারাভাবে করা হয়েছে। রাস্তা দুই ফুট খননের পর বালু দিয়ে ভরাট এবং পানি দেওয়ার কথা থাকলেও তা সঠিকভাবে করা হয়নি। এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, নিম্নমানের কাজের জন্য রাস্তার এই দুরবস্থা তৈরি হয়েছে।
তাদের অভিযোগ, রাস্তার কাজের এই অবস্থা হওয়ার পরপরই মেরামতের জন্য পিআইও অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদকে কয়েকবার জানানো হয়। তিনি ঠিকাদারসহ রাস্তাটি পরিদর্শন করে মেরামতের আশ্বাস দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিদর্শন করতেও আসেননি।
দক্ষিণ ধানঘরা আকন্দপাড়া গ্রামের নুর আহমেদ নয়ন জানান, ঠিকাদার তড়িঘড়ি করে কাজটি শেষ করেছেন। যার কারণে কাজের সঠিক মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অল্প দিনেই রাস্তার যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে দ্রুত তা মেরামত না করলে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শাওন নামে আরেক যুবক জানান, এই রাস্তায় বালু ফেলানোর পর পর্যাপ্ত পানি দেওয়া হয়নি। নামমাত্র রোলার দিয়ে সমান করা হয়েছে। এ কারণে অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই রাস্তাটি উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করা দরকার।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে একাধিকবার কল করলেও ফোন রিসিভ করেননি সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদ জানান, এ রাস্তার অভিযোগের বিষয়ে আমি জানি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটি পরিদর্শন করে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ আল হাসান জানান, রাস্তার এমন দুরবস্থার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।