গাজীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:১২ পিএম
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৩২ পিএম
আন্দোলতরত শ্রমিকরা। প্রবা ফটো
গাজীপুরে বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা, চক্রবর্তী, গাজীপুর সদরের শিরিরচালার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে। এতে মহাসড়কের বেক্সিমকো থেকে জিরানি পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। আন্দোলন নিরসনে দাবিদাওয়ার বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে কাজ করছে পুলিশ।
গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও চক্রবর্তী এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করে কারখানার শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকালে চন্দ্রায় মাহমুদ জিন্স লিমিটেড ও নায়াগ্রা টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। অন্যদিকে চক্রবর্তী এলাকায় বকেয়া বেতন-ভাতার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকরা।
এদিকে গাজীপুর সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানার শিরিরচালার এক্সিকিউটিভ হাই ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানায়, কারখানাটিতে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক আছে। ইতঃপূর্বে শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিদাওয়া কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করে। ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা কারখানার আয়রনম্যান মো. আরমানকে মারধর করে মানিব্যাগ ও মোবাইল কেড়ে নেয়। শ্রমিকদের সন্দেহ, দাবি উপস্থাপন করায় কারখানা কর্তৃপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে তাদের লোকজন দিয়ে আরমানকে মারধর করেছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মবিরতি পালন করছে।
অন্যদিকে টঙ্গীর খাঁপাড়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সিজন ড্রেস নামে একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলন করছে শ্রমিকরা। তারা কর্মবিরতি পালন করে এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
শিল্পপুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খাঁপাড়ায় সিজন ড্রেস কারখানার ৫০০ থেকে ৬০০ শ্রমিক কাজ করে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বকেয়া বেতন-ভাতা ও অন্যান্য দাবিতে কর্মবিরতি করে আন্দোলনে নামে শ্রমিকরা। এ সময় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে শিল্পপুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছে।
কারখানা শ্রমিক পারভিন বলেন, ‘আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। দরকার হলে রাস্তায় শুয়ে পড়ব তার পরও দাবি মানা না পর্যন্ত আন্দোলন থামাব না।’
এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে সদর উপজেলার রাজেন্দ্রপুরে বেতন বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবি জানিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে তাসমিয়া হারবাল লিমিটেডের শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তারা কর্মবিরতি পালন করছে। এ সময় তারা কারখানার ভেতরে হইচই করে। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের মাঝে সমঝোতার চেষ্টা করছে শিল্পপুলিশ।
এদিকে বেতন বৃদ্ধিসহ নয় দফা দাবিতে আন্দোলন করছে ভেরিতাস ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের শ্রমিকরা।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২-এর সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে সিজন ড্রেস কারখানার শ্রমিকরা। তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। এ ছাড়া বেতন-ভাতা পরিশোধে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলমকে মোবাইলে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।