× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বেড়েছে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা, ৪ জনের মৃত্যু

জু‌য়েল সাহা বিকাশ, ভোলা

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:১৫ পিএম

ভোলা সদর হাসপাতালে শয্যায় সংকটে শিশুদের মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার তোলা। প্রবা ফটো

ভোলা সদর হাসপাতালে শয্যায় সংকটে শিশুদের মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার তোলা। প্রবা ফটো

ভোলায় হঠাৎ করেই বেড়েছে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। প্রতিদিনই ভোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অর্ধ শতাধিকেরও বেশি শিশু। এতে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। এদিকে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে দেখা দিয়েছে ওষুধ, ক্যানোলা, নেবুলাইজার মাক্স ও স্যালাইন সংকট। এ ছাড়াও ধারণক্ষমতার বেশি ভর্তি হওয়ায় দেখা দিয়েছে শয্যা সংকটও। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে শিশুদের।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৫ দিনে (২১ আগস্ট-৬ সেপ্টেম্বর) ৭৫০ শিশু ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে চারজন। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ২৫০ জনের বেশি শিশু ভর্তি রয়েছে। অথচ হাসপাতালে শিশুশয্যা রয়েছে মাত্র ৫০টি। গতকাল বি‌কালে সরেজমিনে দেখা যায়, শয্যা না পেয়ে বেশিরভাগ শিশুই হাসপাতালের মেঝে চিকিৎসা নিচ্ছে। যারা শয্যা পেয়েছে তারা এক শয্যায় দু-তিনজন গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে করে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।

দৌলতখান পৌর এলাকার শিশু রোগীর মা লাইজু বেগম ও লালমোহনের চর উম্মেদ এলাকার শিশু রোগীর মা আসমা আক্তার জানান, তাদের ৬ মাস ও ৫ মাসের বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। কোনো শয্যা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তাদের মতো শত শত মা হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে প্রচণ্ড গরমে তাদের ও সন্তানদের সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু কিছুই করার নেই, নিরুপায়। এ ছাড়াও হাসপাতালে ডাক্তার ওষুধ, ক্যানোলা, নেবুলাইজার মাক্স লিখে দিয়েছেন। আর নার্সরা বলছেন, সেগুলো হাসপাতালে নেই, বাইরে থেকে কিনতে হবে। টাকা দিয়ে ফার্মেসি থেকে কিনতে হয়েছে।

ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা জংশন গ্রামের নাজমা বেগম জানান, শিশুর নিউমোনিয়া হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। কিন্তু শয্যা সংকট থাকায় এক বেডে দু-তিনজন করে শিশু রেখে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আমরা একটু বসতেও পারি না। অনেক কষ্টে বাচ্চাদের চিকিৎসা করাতে হচ্ছে।

হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া শিশুদের স্বজন নূরজাহান বেগম, সবিতা রানী, জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজন জানান, দিনে একবার একজন ডাক্তার আসেন বেড ও মেঝেতে ভর্তি হওয়ায় শিশু রোগীদের দেখতে। তাও আবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। এ ছাড়াও নার্সরা ঠিকমতো আসেন না আমাদের সন্তানদের সমস্যা দেখতে। তাদের অনেক ডাকাডাকি করলে তারপর আসেন। অনেক সময় নার্সরা বেশি ডাকাডাকি করলে রাগারাগি করেন। বাধ্য হয়ে বেশিরভাগ সময়ই বাচ্চাদের নার্সদের কাছে দিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। এ ছাড়া বেশিরভাগ ওষুধ বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনে আনতে হয়। 

হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা (শিশু বিভাগ) আবদুল মজিদ শাকিল বলেন, সংকট থাকায় দৈনিক একজন চিকিৎসক শিশু রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে। রোগী বেশি থাকায় চিকিৎসা দিতে গিয়ে অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ দিয়ে শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।

নার্স সুপারভাইজার নাছিমা বেগম বলেন, হাসপাতালে নার্সের সংকট রয়েছে। তাই রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার পরও প্রয়োজনীয় সেবা তারা দিয়ে যাচ্ছেন। তবে একটি শিশুর চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সময় অন্য শিশুদের মায়েরা ডাকাডাকি করেন। ওই সময় তো চিকিৎসাসেবা শেষ না করে আসা সম্ভব নয়। এজন্য রোগীর স্বজনদের অনেক অভিযোগ থাকে।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ইমতিয়াজ বেলাল ওষুধ, ক্যানোলা, নেবুলাইজার মাক্স ও স্যালাইন সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, হঠাৎ নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। এ ছাড়া চিকিৎসক ও নার্স সংকটের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা