কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৯ পিএম
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:১৫ পিএম
কসবায় দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সালিশ বৈঠক চলাকালে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের চান্দাইসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত হাসান মিয়া (২৫), রাইহান (২০), মো. সুজন (২৬), হামদু মিয়া (৭০), আনোয়ার হোসেন (৫৪), ইয়ামিন (৩৬), ফারুক হোসেন (৩৬), সুচী আক্তার (১৯) ও তানজিন মিয়াকে (২০) কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ আশপাশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের চান্দাইসার গ্রামের সফিক মিয়ার ছেলে সবুজ মিয়ার (২০) সঙ্গে একই ইউনিয়নের মজলিশপুর গ্রামের মিন্টু মিয়ার ছেলে শরীফ মিয়ার (১৯) সম্প্রতি একটি নারীসংক্রান্ত ঘটনায় সংঘর্ষ হয়। ওই বিরোধ মেটাতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ চান্দাইসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একটি সালিশ বৈঠকে বসেন। সাবেক ইউপি সদস্য মো. মতিন মিয়ার সভাপতিত্বে এবং বিল্লাল হোসেনের সঞ্চালনায় বৈঠকে ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলাম রাসেলসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক চলাকালে মজলিশপুর গ্রামের মো. হোসাইন বক্তব্য দেওয়ার সময় ক্ষিদিরপুর গ্রামের এমরান সরকার বাধা দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে দুই গ্রামের লোকজনদের মধ্যে সংর্ঘষ বাধে। পরে দুই গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংর্ঘষ শুরু হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ সংঘর্ষ। খবর পেয়ে কসবা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় মজলিশপুর গ্রামের ফারুক হোসেন চান্দাইসার গ্রামের ৯ জনের বিরুদ্ধে এবং চান্দাইসার গ্রামের সুজন মিয়া ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ করেছেন।
চান্দাইসার গ্রামের সবুজ মিয়ার বড় ভাই সুজন মিয়া বলেন, ‘মজলিশপুর গ্রামের শরীফ মিয়া ও তার সঙ্গে আরও ১০-১৫ জন লোক নিয়ে আমার ভাই সবুজ মিয়াকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করেছে।’
মজলিশপুর গ্রামের হামদু মিয়া বলেন, ‘চান্দাইসার গ্রামের লোকজন বৈঠক চলাকালে আমাদের গ্রামের লোকজনদের ওপর সব দোষ চাপিয়ে দেয়। এ সময় তাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলে তারা দা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ চালায়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।’
বিনাউটি ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার রাশেদুল ইসলাম রাসেল বলেন, ‘একটি নারীসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সুবজ ও শরীফ মিয়ার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই বিরোধ মেটাতে সালিশ বৈঠক চলকালে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুই পক্ষই তাদের গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে সংর্ঘষ হয়। এতে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে।’
কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘৯ জনকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।’
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু আহমেদ বলেন, ‘দুই গ্রামবাসীর লোকজনদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। দুই পক্ষ দুটি অভিযোগ করেছে। অভিযোগ দুটি প্রাথমিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’