বামনা (বরগুনা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:১৯ পিএম
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:২৪ পিএম
পূর্ব সোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রবা ফটো
শ্রেণিকক্ষের মেঝে স্যাঁতসেঁতে। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। বৃষ্টি নামলে পানি চুয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের শরীরে। এমন পরিবেশে পাঠদান চলছে বরগুনার বামনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব সোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সরেজমিনে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণিতে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। পুরোনো ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। দেয়ালের কয়েক স্থানে ফাটল ধরেছে। বৃষ্টি হলেই ছাদের বিভিন্ন স্থান দিয়ে পানি চুয়ে পড়ছে। স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়েছে মেঝে। ছাদের অনেক স্থানে ঢালাইয়ের রড বেরিয়ে গেছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলে, বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরায় আতঙ্কে থাকি। আমরা ক্লাসে ভালোভাবে মনোযোগ দিতে পারি না। ছাদ ও পিলারের পলেস্তারা খসে পড়ছে। বর্ষার সময় ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। বই-খাতা পানিতে ভিজে যায়। এ পরিবেশে ক্লাস করে আমরা অসুস্থ হয়ে যাই।
১৯৭৩ সালে পূর্ব সোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা। তারা জানান, ২০০১ সালে চার কক্ষের এক তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়। যেটিতে বিদ্যালয়ের মূল কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন কর্তৃপক্ষ। এ ভবন সংস্কার না করায় ছাদে ফাটল ধরে। পরে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দুটি কক্ষ ভেঙে ফেলা হয়। বর্তমানে যে দুটি কক্ষ আছে তা দিয়ে বর্ষার সময় ছাদ চুয়ে পানি পড়ে।
শিক্ষকরা আরও জানান, ২০১৮ সালে তিন কক্ষের আরেকটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করা হয়। ঘূর্ণিঝড় রিমালে এ ঘরের টিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বৃষ্টির কারণে সেখানে ক্লাস নেওয়া হয় না। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে ২০১১ সালে তিন কক্ষের একটি এক তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। যাতে পাঠাগারসহ দুটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। সেখানে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীর পাঠদান দেওয়া সম্ভব হয় না।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জেসমিন আক্তার রুনা বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। পাঠদানের সময় ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। শ্রেণিকক্ষের মেঝে স্যাঁতসেঁতে। বিকল্প কোনো ভবন না থাকায় বাধ্য হয়ে জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করাতে হয়।’
প্রধান শিক্ষক মোসা. নাজমুনাহার বেগম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের দুটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাধ্য হয়ে ক্লাস নিতে হচ্ছে। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। এখানে নতুন ভবন প্রয়োজন। এ ভবন দিয়ে বর্ষার সময় পানি চুয়ে পড়ে।’
বামনা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নির্মল চন্দ্র শীল বলেন, ‘বিদ্যালয়টির অবস্থা খুব খারাপ। কোনো বরাদ্দ না থাকায় সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। সেখানে নতুন ভবন লাগবে। ভবনের জন্য তালিকা পাঠিয়েছি।’