ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান
লালমনিরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৫০ পিএম
নিহত সুজন।
মেট্রিক পাস করে পরিবারের হাল ধরতে ঢাকার সাভারে জিরাবো এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নিয়েছিলেন সুজন। তার সেই আয়ে চলতেন বৃদ্ধ বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত হওয়ায় এখন দিশেহারা তার পরিবার। কীভাবে চলবে সংসার? কে চালাবে তার পরিবারকে? এ কথা ভেবে কষ্টে দিন যাপন করছেন তার মা-বাবা।
জানা গেছে, সুজন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামের শহিদুল ইসলাম-রেজিয়া বেগম দম্পতির ছেলে। ৫ আগস্ট ঢাকার সাভারে ছাত্র-জনতার মিছিলে যোগ দেন সুজন। পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মাথায় গুলি লাগে তার। ওই দিন বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে একটি হাসপাতালে সুজনের মরদেহের সন্ধান পায় তার এক প্রতিবেশী। পরদিন নিজ গ্রমে সুজনের মরদেহ দাফন করা হয়।
একখণ্ড জমিতে জরাজীর্ণ বাড়িতে নিহত সুজনের মা-বাবা, দাদি, ছোট বোন ও তার সন্তানদের নিয়ে বসবাস। সুজনের চার বোনের বিয়ে হলেও ছোট বোনের যৌতুকের ৮০ হাজার টাকা না দেওয়ায় তার স্বামী শিশু-সন্তানসহ তাদের বাড়িতে রেখে যায়।
ছোট বোন পাকিজা খাতুন বলেন, ভাই হত্যার বিচার চাই আমরা। একমাত্র ভাই আমাদের সব বোনকে বিয়ে দিয়েছেন। এখন কে দেখবে আমাকে?
ছেলের জামা হাতে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা রেজিয়া বেগম। তিনি বলেন, মাসের শেষে ছেলে যে টাকা পাঠাত, সেই টাকায় সংসার চলত, এখন সংসার চালাব কীভাবে?
সুজনের বাবা শহিদুল ইসলাম জানান, পুলিশের গুলিতে তার ছেলে মারা গেছে। তিনি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। জায়গা-জমিও নেই। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এখন তাদের কী হবে?