নাটোর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:২৬ পিএম
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৩ পিএম
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ব্রহ্মপুর ইউনিয়নে সরকারি ইজারার দুটি পুকুর ও দিঘির প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে লুট করা হয়েছে ২ লাখ টাকার ফিশফিড, ভুসি ও মাছের খাদ্য। এ ঘটনায় বিএনপিকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন পুকুর-দিঘির ইজারাদার রইস উদ্দীন রুবেল।
পুকুর ও দিঘির মাছ লুটের পাশাপাশি রুবেলের আরও একটি পুকুর দখল করা হয়েছে। পুকুরে না নামতে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে এই ঘটনায় বিএনপিকর্মীদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে জেলা বিএনপি।
জানা যায়, গত বছর এপ্রিলে নলডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন থেকে ব্রহ্মপুর ইউনিয়নে ছয় বিঘা আয়তনের চেউখালি দিঘি ও দেড় একর আয়তনের বাঙ্গালখলসি পুকুর ইজারা নেন রইস উদ্দীন রুবেল। এসব দিঘি ও পুকুরে ১০ লাখ টাকার মাছের পোনা ছাড়েন তিনি। রইস উদ্দীন রুবেলের অভিযোগ, গত ৭ আগস্ট স্থানীয় সাইফুল, ফছির, মছির, রুহুল, আফজাল, ডলার, মাসুদ, জহুরুলসহ ১০-১৫ জনের নেতৃত্বে চেউখালি দিঘি দখল করে বিএনপিকর্মীরা। এ সময় ২৫ লাখ টাকার মাছ লুট করে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া পাঁচ শতাধিক কলাগাছ, ৭০টি আমগাছ কেটে ফেলা হয়। দিঘির গুদাম থেকে ৪০ বস্তা ফিশফিড, খৈল, ভুসি, সার, জলমোটর, মাছ মাপা পাল্লাসহ ২ লাখ টাকার জিনিসপত্র লুট করা হয়। রুবেলের দাবি, গত গত ১৭ আগস্ট দুই ট্রাকভর্তি ৫ লাখ টাকার মাছ লুট করে স্থানীয় বিএনপিকর্মী সবুজ ও রনি। এছাড়া সাত বিঘা আয়তনের নলডাঙ্গা পুকুরটি গত সপ্তাহে দখলে নিয়েছে জীবন ও খোরশেদ নামে দুই যুবদল কর্মী। মাছ ধরার জন্য এই পুকুরে না নামতে হুমকি দিয়েছে তারা।
ইজারাগ্রহীতা রইস উদ্দীন রুবেল জানান, ব্যাংক ও ব্যবসায়িক ঋণ নিয়ে মাছের চাষ করি। আমার সমস্ত পুঁজি মাছ চাষে বিনিয়োগ করা। আওয়ামী লীগ করার কারণে আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করাসহ মাছ লুট ও পুকুর-দিঘি দখল করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আমার ৩৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাড়িতে থাকতে না পারায় থানায় অভিযোগ দিতেও পারছি না।
এদিকে দিঘি-পুকুর দখল ও মাছ লুটের ঘটনায় জড়িতদের বক্তব্য জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও অভিযুক্তদের কারও সাড়া পাওয়া যায়নি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, আমরা বিভিন্ন এলাকা থেকে খবর পাচ্ছি কম বয়সি ছেলেরা বিএনপির পরিচয়ে লুটপাট-চাঁদাবাজি করছে। তারা বিএনপির কেউ নয়। খোঁজ নিলে দেখা যাবে এরা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল এবং ব্যক্তিগত বিরোধ থেকে এ ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা ঘটাচ্ছে। বিএনপির কেউ এসব ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেওয়ান আকরামুল হক জানান, ইজারা প্রদানের পর সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি দখল ও দেখভালের দায়িত্ব ইজারাগ্রহীতার। এটি তার থেকে পুনরায় দখল হলে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। আপাতত উপজেলা প্রশাসনের কিছু করার নেই।
নলডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোনোয়ারুজ্জামান জানান, মৌখিকভাবে জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে এক দিন লুটের কিছু মাছ উদ্ধার করে ভুক্তভোগী রইস উদ্দীনের পুকুরে ছাড়া হয়েছে। এসব ঘটনায় তিনি অভিযোগ বা মামলা করলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।