মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৩ পিএম
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৩৮ পিএম
ঘাঘট নদীতে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙনের মুখে বসতবাড়ি। প্রবা ফটো
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় ঘাঘট নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নদী তীরবর্তী বাড়িঘর, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে প্রতি বছরই নতুন করে বাড়ছে ভাঙনের পরিধি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতে নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীভাঙন দিন দিন বেড়েই চলছে। একটি প্রভাবশালী মহল ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। কিন্তু ইউএনও বরাবর অভিযোগ দেওয়ার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নের জোতষষ্টিপুর এলাকায় ঘাঘট নদীর মাঝখানে দুটি অবৈধ ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত চলছে এই বালু উত্তোলনের কাজ। এতে পানি প্রবাহের গতি পরিবর্তন হয়ে নদী পাড় ভাঙনে এলাকার ফসলি জমিসহ বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। তবে বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কিছুই বলতে সাহস পাচ্ছে না স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘাঘট নদী এবং এর আশপাশের এলাকাগুলোতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ভাংনী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের কর্মী আখিরুল ইসলাম। পেশিশক্তি ও রাজনৈতিক ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এমন অরাজকতা সৃষ্টি করেছেন তিনি।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, বালু উত্তোলনে জড়িত আখিরুলকে প্রতিহত করা খুবই কঠিন। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে কোনো লাভ নেই। সে আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় প্রতি মাস পর পর ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় এসব অবৈধ ড্রেজার চালায়। আর মধ্যরাতে প্রতিবাদ করতে গেলে প্রাণও হারাতে পারে। তা ছাড়াও আখিরুল ইসলাম ভাংনী ইউনিয়নের হুলাশুগঞ্জ এলাকার করিমপুরেও দীর্ঘ দিন ধরে ড্রেজার দিয়ে আবাদী জমির পাশে পুকুরে বালু উত্তোলন করছেন।
স্থানীয় মাজেদা বেগম ও আয়নাল মিয়া জানান, নদী থেকে বালু তোলার কারণে গ্রামীণ রাস্তাসহ আবাদি জমিগুলোর বেশিরভাগ অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। আর যেটুকু বাকি রয়েছে ওই টুকুই আমাদের শেষ সম্বল। শেষ সম্বলটুকু হারাতে চাই না। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে আখিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বর্তমান ইউএনওর মৌখিক অনুমতি নিয়েই বালু উত্তোলন করছেন তিনি।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) বিকাশ চন্দ্র বলেন, আমি কাউকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেইনি। নাম ভাঙিয়ে এমনটা করতে পারে। তবে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগ দেওয়ার পরেও ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আগে বিষয়টি অবগত ছিলাম না। আপনাদের মাধ্যমেই জানতে পারলাম।’