কালিদাস রায়, নাটোর
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩১ পিএম
লিটনের বাড়ির ছাদে শোভা পাচ্ছে দেশি-বিদেশি প্রায় ৩৫ ধরনের ফল গাছ। প্রবা ফটো
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে দরকার হচ্ছে নতুন নতুন আবাসস্থল। ফলে কমছে ফসলি জমি। অন্যদিকে কংক্রিটের শহরে গাছপালা লাগানো ও চাষাবাদযোগ্য জমি পাওয়া দুষ্কর। ফলে শহুরে বাসিন্দাদের অনেকেই শখ থাকলেও ফুল-ফলের বাগান করতে পারেন না। আবার অনেকে থেমে নেই। শখ মেটাতে বিকল্প হিসেবে বাড়ির ছাদকেই বেছে নিচ্ছেন সৌখিন ফুল-ফলপ্রেমীরা।
ইদানীং শহরের সৌখিন বাসিন্দাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ছাদবাগান। ছাদে কেউ করছেন ফলের চাষ, কেউ ফুলের, কেউবা করছেন শাকসবজির চাষ। ছাদবাগান করে মনের খোরাক জুগিয়ে আর্থিকভাবেও সফল হচ্ছেন অনেকে। এমনিভাবে নিজের করা ছাদবাগানে নানা প্রজাতির ফলের চাষ করে সফলতা পেয়েছেন নাটোরের সিংড়া পৌরশহরের বাসিন্দা তারেকুজ্জামান লিটন। তার দুই তলা বাড়ির ছাদে বর্তমানে শোভা পাচ্ছে দেশি বিদেশি ৩৫ প্রজাতির ফল। তার সফলতা দেখে ছাদবাগান করতে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন।
সরেজমিন জেলার সিংড়া পৌরশহরের বাসিন্দা লিটনের বাড়ির ছাদে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দার্জিলিং মাল্টা, চায়না মাল্টা, বারি-১ মাল্টা, ছিডলেস লেবু, কট লেবু, বারোমাসি আমড়া, থাই পেয়ারা, জাম্বুরা, বারোমাসি আম, মিয়াজাকি আম, ব্যানানা ম্যাংগো, থাই ছবেদা, অস্ট্রেলিয়ান আনার, ইয়েমেনি আনার, ফুলে আরক্তা আনার, করমচা ফল, লাল পেয়ারা, মাধবী পেয়ারা, মালবেরি, আনারকলিসহ প্রায় ৩৫ প্রজাতির ফল শোভা পাচ্ছে। এছাড়া মেহেদি গাছ, গোলাপ, মাধবীলতা, টগরসহ কয়েক ধরনের ফুলগাছও শোভা ছড়াচ্ছে লিটনের বাড়ির ছাদে।
তারেকুজ্জামান লিটন পেশায় একজন মুদি ব্যবসায়ী। ২০১৬ সালে গাছ ও প্রকৃতিকে ভালোবেসে তিনি বাড়ির ছাদে শুরু করেন ফলের বাগান। শুরুতে নাটোর, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী, জামালপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তিনি দেশি-বিদেশি প্রায় ৩৫ ধরনের ফলদ গাছ সংগ্রহ করে ছাদবাগান তৈরি করেন। এরপর থেকে তার ৭ বছরের নিরলস প্রচেষ্টায় বাগানে ফলছে অসংখ্য ফল। নিজের চাহিদা মিটিয়েও বিক্রয় করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি।
লিটন জানান, গাছ ও প্রকৃতিকে ভালোবাসা থেকেই এ ছাদবাগানের সূচনা। এখান থেকে ফরমালিনমুক্ত ফল উৎপাদন করি। নিজেদের চাহিদা পূরণ করে প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের দিই।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানান, বর্তমান সময়ে কৃষির একটি অনুষঙ্গ হয়ে উঠছে ছাদবাগান। অনেকে শখ করে আবার কেউ বাণিজ্যিকভাবে ছাদে বাগান করছেন। আমরা ফাঁকা ছাদে ফুল-ফলের বাগান করতে উদ্বুদ্ধ করছি। সকল সহযোগিতায় উপজেলা কৃষি দপ্তর উদ্যোক্তাদের পাশে আছে।