গোপালগঞ্জ ও কাশিয়ানী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৪৪ পিএম
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:০২ পিএম
দুর্ঘটনা কবলিত বাস। প্রবা ফটো
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে ব্যাংক কর্মকর্তা, মা-মেয়েসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, খুলনার বানিয়াখামার এলাকার সৈয়দ এরশাদ আলীর ছেলে ডাচ বাংলা ব্যাংকের খুলনা জোনের কালেকসন অ্যান্ড মনিটরিং অফিসার সৈয়দ মামসাদ আলী (৩১), টুটপাড়ার বাসিন্দা আবু হাসানের স্ত্রী তহুরা বেগম (৫৫), তার মেয়ে তানিয়া আফরোজ (২৮), গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতান শাহী গ্রামের মোতালেব শেখের ছেলে রইজ শেখ (২৪), বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার সারুলিয়া গ্রামের মো. হাসিব মোল্লার ছেলে সাগর মোল্লা (২৪) এবং একই জেলার ফকিরহাট উপজেলার টাউন নওয়াপাড়া এলাকার আ. সামাদ গাজীর ছেলে সাইদুর রহমান (৪৪)।
আহতদের কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. বাকের আলী খান জানান, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক ঢাকা থেকে আসা একটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। বাসটি খুব গতি সম্পন্ন ছিল। ঘটনাস্থল থেকে আমরা প্রথমে চারটি লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হই। কিছু সময় পরে বাসের ভেতর থেকে আরও একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সড়ক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাইওয়ে মাদারীপুর জোনের ডিআইজি মো. শাহিনুর আলম খান, গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুল কবির চন্দনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য খোঁজখবর নেন।
কাশিয়ানী জোনের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মোল্লা সেকেন্দার আলী বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। দুপুরে দুর্ঘটনাকবলিত বাস এবং ট্রাকটি হাইওয়ে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
নিহত ব্যাংক কর্মকর্তা সৈয়দ মামসাদ আলীর বোন দিলরুবা খানম বলেন, আমার ভাই সৈয়দ মামসাদ আলী আজ ব্যাংকের কাজে সকালে ইমাদ পরিবহনে করে খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু পথিমধ্যে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। আমি খবর পেয়ে ভাইয়ের মরদেহ নিতে এসেছি। আমার ভাইয়ের মরদেহটি আমাকে নিতে হবে এটা কখনও ভাবতে পারিনি। ভাইয়ের অকাল মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে যেন আর কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে এবং কোনো মায়ের কোল খালি না হয় তার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল্লাহ হেল বাকী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলেই পাঁচজন মারা যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও একজন মারা যান।
তিনি বলেন, এ সময় সড়কের উভয় পাশে বেশকিছু যানবাহন আটকা পড়ে। প্রায় ৩০ মিনিট যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে। পরে আহতদের মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, নিহতদের স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহগুলো বিকালে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।