× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বানভাসিদের এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা

ফেনী প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৪ ১৬:৫৩ পিএম

আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২৪ ১৬:৫৪ পিএম

বানভাসিদের এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা

বানের পানি কমার খবরে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে হাসিমুখে বাড়ি ফেরেন ফুলগাজীর ষাটোর্ধ্ব সগুরা খাতুন। কিন্তু সেই হাসি ফিকে হয়ে গেল মুহূর্তেই। সাজানো-গোছানো ঘরটার কিছুই যে অক্ষত রইল না। খাট, পালঙ্ক, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, দলিল-দস্তাবেজ বানের পানি ধ্বংস করে দিয়ে গেছে ঘরের সব।

শুধু সগুরা খাতুনই নন, তার মতো অন্যসব বন্যার্তদের রেখে আসা ঘর-বসতিরও যেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম বানভাসি পরিবারগুলোর। ফেনীতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার পর ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে ক্ষত চিহ্ন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে মানুষ ফিরতে শুরু করলেও কাটেনি দুর্ভোগ। এখন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে ঘুরে দাঁড়ানোই তাদের জন্য চ্যালেঞ্জের।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা ও জানা গেছে, মনির-সাবিনা দম্পতির জমজ কন্যা সন্তান নৌকা থেকে পড়ে ডুবেছে বানের পানিতে। মিনিট কয়েক পর উদ্ধার কর্মীরা কোলে ফিরিয়ে দিলেও তারা এখনও গুরতর অসুস্থ। সব হারিয়েও সন্তানদের বুকে রাখতে পেরে সান্ত্বনা খুঁজে নতুন করে বাঁচার চেষ্টা।

দাগনভূঞা উপজেলার গজারিয়া বাজারের ওষুধ দোকানি লক্ষণ চন্দ্র নাথ। দোকানে ছিল ৬ লক্ষাধিক টাকার ওষুধ। বন্যার পানি কমার পর দোকান খুলে দেখে দোকানের অধিকাংশ আসবাব নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক ওষুধ আর বিক্রির যোগ্য নেই। যা আছে তা নিয়ে আবার দোকান চালু করেছেন।

পরশুরাম উপজেলার কোলাপাড়া গ্রামের কৃষক ইমাম হোসেন বলেন, বন্যায় নষ্ট হওয়া সবজির মাচা ভেঙে নতুন করে তৈরি করছেন। সেখানে মাত্র কয়েক হাজার টাকার বিক্রির পর বন্যায় সম্পূর্ণ পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।

ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুরের সমাজসেবক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বন্যায় চারিদিকে সবকিছুই প্লাবিত। বানভাসিরা যেখানে খেতে পাচ্ছে না সেখানে ফসলের উপকরণ কেনা তাদের পক্ষে অসম্ভব। এখন কৃষকদের মাঝে ধানের চারা ও শাকসবজির বীজ দিলে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি ও সাহস পাবে।

সব হারানোর এমন গল্প একটা দুটো নয়, শত শত। ঘর-বসতির আসবাব, কাপড়চোপড় থেকে ব্যবসার পুঁজি। সব হারিয়ে দিশেহারা মানুষগুলো।

বানের পানি যতই কমছে, মানুষের বেঁচে থাকার সহায় সম্বলগুলোর ক্ষত চিহ্ন যেন ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। সহায়-সম্বল হারিয়ে একদম নিঃস্ব বানভাসিরা।

কৃষিখাতে ইতোমধ্যে প্রায় হাজার কোটি টাকার মতো ক্ষতি নিরূপণ করা গেলেও রাস্তা-ঘাট অবকাঠামো এবং মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সার্বিক ক্ষতি এখনও নিরূপণ করা যায়নি। তবে বিভিন্ন মহল থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এ বন্যায় ফেনীতে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে ২০ হাজার কোটির বেশি।

এদিকে বন্যা পরবর্তী স্থানীয়দের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে মাঠে কাজ করছে সেনা, নৌ বাহিনী। অন্য যেকোনো সময়ের চাইতে এ বন্যায় দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রমে সশস্ত্র বাহিনীকে মাঠে দেখেছে স্থানীয়রা।

চলতি বছরের তৃতীয় দফার এ বন্যায় ফেনীর সবকটি উপজেলার বিভিন্ন জনপদ আক্রান্ত হয়। মাইলের পর মাইল রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়। হাঁটার পরিস্থিতি নেই অনেক রাস্তায়। কৃষি, মৎস্য, পোল্ট্রিসহ সার্বিক ক্ষতি হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ। ঝরেছে ১৯ প্রাণ।

ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে তৃতীয় দফার এ বন্যা ফেনী জেলা প্রশাসনের হিসেবে মতে পানিবন্দি হয়েছে ১১ লক্ষাধিক মানুষ। দেড় লক্ষাধিক মানুষকে উদ্ধার করেছে বিভিন্ন বাহিনী। ১ লাখ প্যাকেটের বেশি শুকনো খাবার প্যাকেট বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনী। এছাড়া সারা দেশের কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক লাখ লাখ প্যাকেট ত্রাণ দিয়েছে দুর্গতদের।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা