গাজী টায়ার কারখানা পরিদর্শন শেষে তদন্ত কমিটি
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৪ ১৯:৪৫ পিএম
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৪ ২০:৫০ পিএম
কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান। প্রবা ফটো
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসীতে গাজী টায়ার কারখানায় আগুনের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের গঠিত কমিটির সদস্যরা বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকালে কারখানাটি পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন শেষে কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এই মুহূর্তে পুড়ে যাওয়া কারখানাটিতে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়। কারণ, ভবনের ৪, ৫ ও ৬ তলার ফ্লোর ধসে গেছে এবং এখনও আগুন রয়েছে।
ব্যাখ্যায় কমিটি প্রধান বলেন, ‘আমি ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে পারবে কি না। তারা আমাকে জানিয়েছেন ৪, ৫ ও ৬ তলার ফ্লোর ধসে গেছে এবং এখনও আগুন রয়েছে। এ মুহূর্তে উদ্ধার কার্যক্রম সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে পরিদর্শনে আসলাম। দেখি, পরিবর্তীতে আমরা একটি প্রতিবেদন আকারে দেব। এই হলো আমাদের প্রাথমিক কথা।’
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যোগ করেন, ‘আগুনের বিষয়ে টেকনিশিয়ানরা আমাদের মতামত দেবে। এ ছাড়া লোকালি যারা ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বে রয়েছেন, তারা উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে পারবেন কি না তা জানাবেন, নয় তো আমরা ন্যাশনালি সাপোর্টের জন্য সুপারিশ জানাব যে, এটা লোকালি করা সম্ভব নয়। আরও যারা টেকনিশিয়ান রয়েছে তাদের সহযোগিতা নিয়ে কার্যক্রম চালাব। আমরা আশা করি, ১০ দিনের মধ্যে একটি তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারব।’
গত রবিবার রাতে গাজী গ্রুপের টায়ার তৈরির এ কারখানায় লুটপাটের পর আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্তও কারখানায় উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। এরই মধ্যে স্বজনরা দাবি করেছেন, কারখানাটিতে ১৭৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের সন্ধানে সেসব স্বজনদের আজও কারখানার সামনে ভিড় করতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘নিখোঁজদের নাম-ঠিকানা লিপিবদ্ধ করে রাখতেছি। আসলে কয়জন ভেতরে ছিল বা কয়জন মারা গেছে, আমরা সঠিকভাবে বলতে পারছি না। ফায়ার সার্ভিসের যে ড্রোন, সে ড্রোন দিয়ে তারা দেখেছেন। ওই রকম মৃত লাশ কিন্তু দেখেনি।’
কারখানার ভেতরে লাশ থাকলেও দীর্ঘ সময় পর তা পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সন্দিহান কমিটিপ্রধানের। বলেন, ‘আমরা মনে করছি যে, হয় তো এখানে যেভাবে কেমিক্যাল পুড়েছে, আদৌ লাশ থেকে থাকলেও ওইভাবে আর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, ২১ থেকে ২২ ঘণ্টা আগুন জ্বলেছে, ততক্ষণে লাশের কিছু পাওয়ার মতো অবস্থা নেই। আপনারা বুঝতেই পারছেন ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার মধ্যেই একটি লাশ কয়লা হয়ে যাওয়ার কথা।’
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভেতরে কী হয়েছে বা বর্তমানে কী আছে বিষয়টি উদঘাটনের চেষ্টা করব।’
স্থানীয়দের বরাতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘শতাধিক লোক ভেতরে ছিল বলে আমরা স্থানীয়ভাবে জানতে পেরেছি। যারা নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের নাম-ঠিকানা লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। নিখোঁজদের ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’