আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ
টাঙ্গাইল প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৪ ২২:০৫ পিএম
ইমন হাসান। ফাইল ফটো
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন টাঙ্গাইলের ইমন হাসান। গুলিবিদ্ধ হওয়ার ১৩ দিন পর রবিবার (১৮ আগস্ট) ভোর ৫টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। এর আগে গত ৪ আগস্ট মির্জাপুরের গোড়াই এলাকায় মিছিলে গিয়ে পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি।
ইমন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার জগৎপুরা গ্রামের মৃত জুলহাস উদ্দিনের ছেলে। তিনি গোপালপুরের হেমনগর ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। বাবা মারা যাওয়ায় নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের হাল ধরতে হয়েছিল ইমনকে।
সরেজমিনে ইমনের নানা ও দাদার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে প্রতিবেশীরা ভিড় করছে ও তার স্বজনরা আহাজারি করছে। এসময় কথা হয় ইমনের দাদী ময়মনা বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, আন্দোলনে মির্জাপুরের গোড়াই নামক স্থানে মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইমন। মিছিলে পুলিশের গুলিতে ইমন আহত হয়। শুধু তাই নয়- পুলিশরা গুলি করেও শান্ত হয়নি, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথারি লাঠি দিয়ে আঘাত করে।
এ সময় তার বন্ধুরা আহত ইমনকে হাসপাতালে নিতে চাইলেও পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ সেখান থেকে সরে গেলে গুরুত্বর অবস্থায় তাকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হয়। গত ৬ তারিখে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার খরচ সামলাতে না পেরে ঢাকা মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার ১৩ দিন রবিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
ইমনের প্রতিবেশী বন্ধু রনি, রঞ্জু, সাইফুল, শাকিব ও অন্তর বলেন, ইমন টাঙ্গাইল শহরে তার চাচা নবাবের বাসায় থেকে টিউশনি করত। গত ৪ আগস্ট মির্জাপুরের গোড়াই এলাকায় মিছিলে গিয়ে পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে গুরুত্বর আহত হয়। ইমন অনেক ভাল মনের মানুষ ছিল এবং পুরো পরিবার তার ওপর নির্ভরশীল। সে মারা যাওয়ায় সংসারের হাল ধরার আর কেউ রইল না। ইমনকে হারিয়ে পরিবারটি এখন একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেল।
ইমনের মৃত্যুর খবরে গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা তার স্বজনদের সমবেদনা জানান।
নিহত ইমনের প্রথম জানাজা ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দ্বিতীয় জানাজা নিজ গ্রামের নলিন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হওয়ার কথা রয়েছে। তার দাদার বাড়ির পাশের একটি কবরস্থানে দাফন হবে বলে জানা গেছে।