বরিশাল সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৪ ২০:৪৭ পিএম
আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০২৪ ২১:১৪ পিএম
নিহত রাশেদ সিকদার। ছবি: সংগৃহীত
বরিশালের গৌরনদীতে চাঁদা না দেওয়ায় রাশেদ সিকদার নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়। আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় হামলার ঘটনা ঘটে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
নিহত রাশেদ গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড় দুলালি গ্রামের কামাল সিকদারের ছেলে। রাশেদ কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও তার শ্বশুর বাড়ির স্বজনরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
নিহতের বড় ভাই রাসেল শিকদার বলেন, ‘আমার ভাই রাশেদ সিকদার ঢাকায় থাকতেন। সম্প্রতি বাড়িতে এলে বার্থী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. আল আমিনসহ কয়েকজন তার কাছে ১ লাখ টাকা চায়। তবে সেটি ধার বাবদ না চাঁদা বাবদ সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আর ওই টাকা না পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় রাশেদকে তারা মারধর করে। একপর্যায়ে কাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাশেদকে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তীতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই শনিবার সকালে রাশেদের মৃত্যু হয়।’
রাশেদ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না জানিয়ে রাসেল শিকদার বলেন, ‘তবে রাশেদের শ্বশুর বাড়ির সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন বার্থী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আল আমিন ও তার সহকর্মীরা। রাশেদ চাঁদা দিতে না চাইলে তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন তারা। আমাকে রাশেদ বলেছিল ভাই আমার কাছে আল আমিনসহ কয়েকজন টাকা চায়। আমি বলেছিলাম বাড়ি গিয়ে এ বিষয়টি ঠিক করে দিব। কিন্তু তার আগেই আমার ভাইকে ওরা মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।’
রাশেদের বাবা কালাম সিকদার বলেন, ‘রাশেদ ঢাকার একটি প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করত। শুক্রবার বিকেলে সে বাড়িতে আসে। ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে রাশেদকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। হামলাকারীদের অনেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আর হামলাকারীরা রাশেদের কাছে চাঁদা চেয়েছিল। না দেওয়ায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।’
তবে এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা আল আমিনকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই রাসেল শিকদার বার্থী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. আল আমিন, হামিম তালুকদার, ফয়সালসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছে। আসামিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।