সদরপুর (ফরিদপুর) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৪ ২১:০০ পিএম
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৪ ২১:১৪ পিএম
টিকটক করতে গিয়ে গুলিতে নিহত পলাশ হোসেন। প্রবা ফটো
ফরিদপুরের সদরপুরে থানা থেকে লুট করা অস্ত্র নিয়ে টিকটক করছিলেন তিন তরুণ। এ সময় সেই অস্ত্রের গুলিতে পলাশ হোসেন নামে একজন আহত হন।
সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল ৬টার দিকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত ৬ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন ওই তরুণ। পলাশ সদরপুর উপজেলার আটরশি গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ আগস্ট সকালে পলাশ তার বাবার হোটেলে কাজ করছিলেন। এ সময় তার দুই বন্ধু সদরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী পলাশকে হোটেল থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরে তারা আটরশি গ্রামে পলাশের নানা মোসলেম মাতুব্বরের বাড়িতে যান। ওই বাড়ির একটি কক্ষে তারা তিনজন একত্রিত হয়ে টিকটক ভিডিও করার জন্য গত ৫ আগস্ট সদরপুর থানা থেকে লুট করে নেওয়া একটি শর্টগান একে অপরের মাথায় তাক করে অভিনয় করতে থাকেন। হঠাৎ শটগান থেকে গুলি বের হয়ে পলাশের মাথায় লাগে। গুলির শব্দ এবং পলাশের চিৎকার শুনতে পেয়ে বাড়ির লোকজন সেখানে গিয়ে পলাশকে রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে।
পলাশকে প্রথমে তারা আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল হাসপাতালে নেয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর থেকে ঢাকা নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ছয় দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার ভোরে মারা যান পলাশ।
স্থানীয়রা জানায়, অস্ত্রটি সদরপুর থানা থেকে লুট হওয়া একটি শটগান। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন বিকালে সদরপুর থানা থেকে ওই শটগান লুট করা হয়েছিল। সদরপুরের আনসার বাহিনী অস্ত্রটি আটরশির একটি পরিত্যক্ত ভবন থেকে উদ্ধার করে। পরে সেটি ফরিদপুর সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনার পর পলাশের ওই দুই বন্ধু ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপন করায় এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
নিহত পলাশের মা পারুলি আক্তারের দাবি, সদরপুর থানা থেকে লুট করা অস্ত্র দিয়ে তার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। থানার কাজকর্ম শুরু না হওয়ায় তখন এ বিষয়ে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পলাশের মা পারুলী আক্তার বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। পলাশের মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।
ওসি বলেন, তদন্ত করলে জানা যাবে, টিকটক করতে গিয়ে গুলি বের হয়ে পলাশ মারা গেছেন না কি এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।