যশোর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২২:৩৭ পিএম
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২২:৪২ পিএম
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর সারা দেশে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। যশোরের পাঁচ তারকা হোটেল ‘জাবির ইন্টারন্যাশনালে’ অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। হোটেলটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন। এ ঘটনায় ছয়জন নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতরা যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সোমবার (৫ আগস্ট) বিকাল ৪টার দিকে হোটেলটিতে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় হোটেলের ভেতরে অনেকে আটকা পড়েন। পরে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধারকারীর দল ১৪ তলা বিশিষ্ট হোটেলের ছাদ থেকে কয়েকজনকে উদ্ধার করে। পরে ফায়ার সার্ভিস সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে যশোর শহরে বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধ লোকজন চিত্রা মোড়ে অবস্থিত হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাংচুর শুরু করে। দ্বিতীয় দফায় ৪টার দিকে তারা অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় হোটেলের ১২, ১৩ ও ১৪ তলায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জাবির হোটেলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে পাঁচজনের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে আনে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। আহতদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কাজনক।’
এদিকে শাহীন চাকলাদারের হোটেল ছাড়াও তার শহরের কাজীপাড়া কাঠালতলার বাসভবন, কাজীপাড়ায় যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাসা, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, শেখ রাসেলের ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কোনো সদস্যকে রাস্তায় দেখা যায়নি। ফোন করলেও কেউ ফোন ধরেননি। এছাড়া চাঁচড়ায় যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।
এদিকে যশোর ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাশেদ খান সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, অনেকদিন ধরে যশোরে আন্দোলন করে আসছি। যশোরে কোথাও সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। আজ আমাদের বিজয়ের দিনে এমন ঘটনা ঘটেছে, সেটি দুঃখজনক। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দিয়েছি যেন কোন ধরনের সম্পদের ক্ষতি না করা হয়। আগামীকাল ১১টায় যশোর চাচড়া চেক পোস্টে আমাদের বিজয় মিছিল হবে। এরপর আমরা ওইখান থেকে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি জানিয়ে দেব।