শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২১:৩৯ পিএম
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৪ ২২:০৬ পিএম
গাজীপুরের শ্রীপুরে বিজিবের সঙ্গে সংঘর্ষে ৬ জন আন্দোলনকারী নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এতে অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী ও উৎসুক জনতা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ সময় বিজিবির তিনটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা (বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্পের) সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, শ্রীপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দারোগারচালা গ্রামের শুক্কুর আলমের ছেলে শরীর আহমেদ , ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার আব্দুল হাইয়ের ছেলে জুয়েল মৃধা, হালুয়াঘাট উপজেলার তাজুল ইসলামের ছেলে কাওসার, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার আসাদের ছেলে সিফাত উল্লাহ এবং ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দা অজ্ঞাত দুইজন।
মাওনা চৌরাস্তা আলহেরা মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওবায়দুল্লাহ বলেন, হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত অবস্থায় পাঁচজনের মরদেহ আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন ছাড়া তিনজনের নাম পরিচয় জানা গেছে। নিহত জুয়েল মৃধাকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের নয়নপুর এলাকার তার ভায়রা আরিফ সরকারের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ২২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিজেবির গুলিতে ৬ জন আন্দোলনকারী নিহত হগেছে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শতাধিক আহত থাকতে পারে। আন্দোলনকারীরা বিজিবির তিনটি গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। খবর পেয়ে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার এসে বিজিবি সদস্যদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আন্দোলনকারীদের নিবৃত্ত করতে বিজিবি গুলি ছুড়লে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গুলিবিদ্ধরা হয়ে আহতরা হলেন, জাকির, ইদ্রিস, আজাহার, মারুফ, রিয়াজ, স্বপন, বাবুল, শামীম, রায়হান, ফারুকসহ অজ্ঞাত কমপক্ষে অর্ধশতাধিক।
জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ বিভাগে নিয়োজিত বিজিবি সদস্যের কয়েকটি বাসে করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছিল। বাসগুলো মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় আসলে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা আটকে দেয়। দুটি বাসে থাকা প্রায় ৮০ জন বিজিবি সদস্যদের মুলাইদ এলাকার বাংলাদেশ ফিলিং স্টেশনের সামনে আটকে দেয়। এ সময় আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা তাদের ভারতীয় পুলিশ বা বিএসএফ সদস্য ও তারা হিন্দি কথা বলে প্রচার করে। একপর্যায়ে বিজিবি সদস্যের কাছে থাকা অস্ত্রসহ গোলাবারুদ আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা বস্তায় ভরে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার একপর্যায়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা বিজিবি সদস্যদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গুলি করেন।
শ্রীপুরের মাওনা আলহেরা হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল হোসেন জানান, দুপুরের পর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ ২২ জনসহ ৫০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জারিন ফারা বলেন, বিকালে গুলিবিদ্ধ চারজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সোহেল রানা জানান, এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।