× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সুযোগ পেলেই দাম বাড়ান, বস্তার গায়ে লেখা নেই দাম

চট্টগ্রাম অফিস ও কুষ্টিয়া প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৪ ১৬:১০ পিএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

‘পাঁচ, সাতটা কোম্পানি ছাড়া আর কেউ চালের বস্তার গায়ে দাম লেখে না। যেসব প্রতিষ্ঠান দাম লেখে, তারাও সবসময় লেখে না। আর লিখলেও অনেক সময় তা থাকে অস্পষ্ট হরফে’, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকার পরও চালের বস্তার গায়ে কেন দাম লেখা নেই জানতে চাইলে কথাগুলো বলেন পাহাড়তলী বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজা খান। 

তিনি আরও বলেন, বস্তার গায়ে উৎপাদন তথ্য এবং দাম লেখা থাকলেও সেখানে সঠিক তথ্য দেওয়া হয় না। গত ২৩ মে একটি কোম্পানি থেকে চাল কিনেছিলাম, ওইদিন আমাদের আড়তে যেই চালের বস্তা এসেছে, সেগুলোতে উৎপাদন তারিখ লেখা ছিল ৭ জুন। অর্থাৎ যে চাল মে মাসে কিনলাম, তার উৎপাদন তারিখ দেওয়া আছে ১৫ দিন পরের। এটা ভোক্তাদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণাও বটে।’

শুধু রেজা খান নন, একই ধরনের মন্তব্য করেছেন পাহাড়তলী বাজারের আড়তদাররা। তারা জানিয়েছেন, সবগুলো মিলার বস্তার গায়ে দাম না লেখার কারণে তারা ভোগান্তিতে পড়েন। এজন্য প্রায় সময় ক্রেতাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। গায়ে উল্লেখ না থাকায় কোনো অজুহাত পেলেই যে যার মতো বাড়িয়ে দেন দাম।

বস্তার গায়ে দাম উল্লেখ না থাকায় সম্প্রতি সারা দেশে ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কারফিউতে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকার অজুহাতে বস্তাপ্রতি চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আগে কেনা আড়তে থাকা চালের দামও বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

এর আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি চালের বস্তার গায়ে দামসহ অন্যান্য তথ্য লেখার নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, চালের বস্তায় ধানের জাত ও মিলগেটের মূল্য লিখতে হবে। সেই সঙ্গে লিখতে হবে উৎপাদনের তারিখ ও প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম, প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের অবস্থান (জেলা ও উপজেলা)। ওজনের তথ্যও উল্লেখ করতে হবে সেখানে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। পাহাড়তলী বাজারের অধিকাংশ আড়তে থাকা চালের বস্তার গায়ে লেখা নেই দাম, উৎপাদনের তারিখ ও মিলের নাম। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বস্তায় দাম লেখা থাকলেও সেটি অস্পষ্ট। আবার দাম লেখা থাকলেও লিখে রাখেন মিলগেটের বেশি। অনেক সময় দেখা যায় কেনা দামের সঙ্গে যাতায়াত ভাড়া যোগ করার পরও বস্তার গায়ে লেখা দামের চেয়ে বেশি লেখা থাকে।  

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের চালের বস্তায় দাম লেখা নেই। ছোটখাটো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বস্তায় দাম লেখা আছে। এর মধ্যে রজনীগন্ধা, গোলাপফুল মার্কা, হরিণ মার্কা চালের বস্তাগুলোতে লেখা আছে। তবে এসব প্রতিষ্ঠানও সবসময় লেখে না বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা। পাহাড়তলী বাজারের আড়তদাররা বলেন, বস্তার গায়ে দামসহ উৎপাদনের তারিখ লিখে দেওয়ার জন্য আমরা বলি। কিন্তু মিলমালিকরা তা শোনেন না। 

মিল না থাকায় বাজারে চালের চাহিদার প্রায় পুরোটায় সরবরাহ করা হয় নওগাঁ, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে। আড়তদাররা জানিয়েছেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হলেও যেসব এলাকায় মিল আছে, সেখানে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। 

জানতে চাইলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন জারি করে আমরা বস্তার গায়ে দামসহ তথ্য লিখে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। কিন্তু মিলমালিকরা সেটি মানছেন না। ২৮ জুলাই মিলমালিকদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় বৈঠক করা যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বৈঠক করব। একটি নির্ধারিত তারিখ দিয়ে ওই সময়ের মধ্য নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা বাধ্যতামূলক করে দেব। ওই সময়ের পর আমরা নির্দেশনা বাস্তবায়নে অভিযান শুরু করব।’ 

কুষ্টিয়া মোকামে জেলা প্রশাসনের অভিযান

ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে কুষ্টিয়া খাজানগর মোকামে সব ধরনের চালের দাম প্রতি কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন মিলমালিকরা। কারণ ছাড়াই মিলগেটে চালের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। 

ইতোমধ্যে বাড়তি দামে চাল বিক্রি করায় দুই প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

প্রতিষ্ঠান দুটি হলো সুবর্ণা অ্যাগ্রো ফুড ও কুষ্টিয়া রাইস মিল। গত বৃহস্পতিবার অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। 

তবে মিলমালিকদের দাবি, ধানের দাম প্রতি মণে বেড়েছে ২০০ টাকা। তাই চালের দাম বেড়েছে। তবে অন্য মিলের তুলনায় যে দুই প্রতিষ্ঠানে জরিমানা হয়েছে, তারা ২ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছিল। 

জেলা চালকল মালিক সমিতির (একাংশ) সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, কোনো মিলমালিক ইচ্ছা করে দাম বাড়াচ্ছেন না। ধানের দাম বেড়েছে তাই চালের দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। তবে কোনো কোনো মিলমালিক বাজার পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একটু বেশি দামে বিক্রি করছেন। তাদের এসব বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা