জামালপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪ ১৮:৩১ পিএম
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৪ ১৮:৪৮ পিএম
আব্দুল জলিল। প্রবা ফটো
জামালপুর সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি ও প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন সদস্যরা। সম্প্রতি পরিষদের ৭ সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল জলিল দায়িত্বগ্রহণের পর থেকেই নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অপকর্ম অব্যাহত রেখেছেন। পরিষদে কোনো মাসিক সভা ও রেজল্যুশন না করেই সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে নিয়মিত বিল-ভাউচার করেন। ইউনিয়ন পরিষদের আয় থেকে সদস্যদের ভাতা পরিশোধের নিয়ম থাকলেও চেয়ারম্যান ইচ্ছা করেই দেন না। হতদরিদ্রদের ভিজিডি কর্মসূচির কার্ডধারীদের ব্যাংক হিসাবে সঞ্চয় রাখার কথা বলে প্রতি মাসে টাকা নিলেও এখন পর্যন্ত কোনো হিসাব খোলা হয়নি। দুই ঈদে বিজিএফ বরাদ্দ থেকে অর্ধেক চাল বিক্রি করে দিয়ে আংশিক স্লিপে বিতরণ করেন। সভা না করে ও সদস্যদের তোয়াক্কা না করে দালালের মাধ্যমে বয়স্ক, গর্ভবতী, বিধবা ও প্রতিবন্ধী কার্ড টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেন। ইজিপিপি প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে এলজিএসপির কাজ করান তিনি।
এ ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করার সময় নির্ধারিত ফি’র বদলে কয়েকগুণ বেশি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবছর একই কাজ বারবার বাস্তবায়ন দেখিয়ে এলজিএসপির বরাদ্দের বিপুল অঙ্কের টাকা তুলে নেন তিনি। হোল্ডিং ট্যাক্সের লাখ লাখ টাকা আদায় করে এলাকার কোনো উন্নয়নমূলক কাজ না করে আত্মসাৎ করেন। চর গোবিন্দবাড়ি গুচ্ছ গ্রামে ১৭ শ্রমিককে ৩১ দিন কাজ করিয়েও কোনো মজুরি দেননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেছিলেন। আবার তারা তুলে নিয়েছেন।
অভিযোগ তুলে নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে জানান ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রমজান আলী, ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আশরাফ হোসেন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মাজেদা বেগমসহ কয়েকজন। তারা বলেন, আমরা চেয়ারম্যানের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ করেছি। আমরা কোনো অভিযোগ তুলে নিইনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিন্নাত শহীদ পিংকি বলেন, ‘অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তদন্তকারী কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ‘তদন্ত প্রায় শেষের দিকে। সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেওয়া শেষ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’