রেল বন্ধ, বেকার স্টেশন সংশ্লিষ্টরা
শফিক সরকার, ময়মনসিংহ
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৪ ১৩:০২ পিএম
ময়মনসিংহ রেলওয়ের ফাঁকা স্টেশনে বসে আছে পান বিক্রেতা রাজু আহম্মেদ। প্রবা ফটো
রেলওয়ে স্টেশনে ছোট দোকানে চা-পান বিক্রি করেন যুবক রাজু আহম্মেদ। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। ময়মনসিংহ নগরীর একটি মেসে থাকে সে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশনের ২ নং প্ল্যাটফর্মে চা-পানের দোকান করত সে। এর উপার্জনে চলত তার খরচ ও ছোট ভাইবোনের লেখাপড়ার খরচ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে দশ দিন ধরে দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ময়মনসিংহ জংশনে আটকা পড়েছে ১০টি ট্রেন। স্টেশনে পিনপতন নীরবতা। পান দোকানদার রাজু তার দোকানের খবর নিতে প্রতিদিনই স্টেশনে আসে।
গত রবিবার তার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘ভাই, আঙ্গরে বাছান। দশ দিন ধরে দোকান বন্ধ। যে কয়ডা ট্যাহা ছিল ওইগুলোও শেষ। এহন আমার কাছে যে ট্যাহা আছে, আমার আর এক দিন চলবে। এর পর কী দিয়া চলমু আর কী খামু। বাবা-মা ফোন দেয়, কিছু ট্যাহা পাঠাও। কী যে করমু বুঝতে পারছি না।’
স্টেশন সূত্রে জানা যায়, বিজয় এক্সপ্রেস, জামালপুর এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণাসহ ১০টি ট্রেন আটকা পড়েছে ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশনে। কোটা আন্দোলনের কারণে ১৮ জুলাই থেকে এই ট্রেনগুলো এই স্টেশনে আটকা রয়েছে। ট্রেনের নিরাপত্তার স্বার্থে স্টেশনে ঢোকার সকল পথ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। পুলিশ ও স্টেশন রক্ষাকারী বাহিনী পুরো এলাকায় পাহারায় রয়েছে।
এই স্টেশন থেকে প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগাম, জামালপুর, নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করত ট্রেন। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় দোকানদার, লেবার, হকারসহ আরও অন্যান্য পেশায় জড়িত সবাই এখন বেকার। তাদের দিন এখন আর চলছে না। কষ্টে চলছে জীবন। খেয়ে না খেয়ে চলছে তাদের সংসার।
রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক একরামুল হক জানান, ট্রেনের নিরাপত্তায় তারা সজাগ রয়েছেন। ট্রেন সংশ্লিষ্ট লোক ছাড়া কারও ঢোকার অনুমতি নেই স্টেশনে।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে সুপারিনটেনডেন্ট নাজমুল হক বলেন, সরকারের নির্দেশে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ময়মনসিংহেও ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে কাউকে স্টেশনের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। জংশনে বিভিন্ন রোডের ১০টি ট্রেন রাখা হয়েছে।