বাগেরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৪ ২০:৩৪ পিএম
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪ ২০:৩৫ পিএম
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরী ও তার মা। প্রবা ফটো
বাগেরহাটের শরণখোলায় মুরগি চুরির অপবাদে এক কিশোরী ও তার মাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই কিশোরী ও তার মা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী কিশোরী লামিয়া আক্তার বলেন, মা অনেক দিন ধরে অসুস্থ। বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের ঔষুধ কিনতে বাজারে যাওয়ার পথে স্থানীয় মাওলানা আশ্বাপ আলী আমাকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় এবং মুরগি চুরি করেছি বলে মারধর করে। পরে তারা ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তপু বিশ্বাসকে ডেকে নিয়ে আসে। তপু বিশ্বাস এসে কোনকিছু না শুনে প্রথমে লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করে। পরে হাত-পা বেঁধে পায়ের তলায় পিটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে মা আসলে, তাকেও বেঁধে মারধর করেন তপু বিশ্বাস। তপু বিশ্বাস আমার বোরকা ছিড়ে ফেলে, আমার গায়ে হাত দেয়। মুরগি চুরির জরিমানা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, না হলে আবারও মারধর করা হবে বলে হুমকি দেয়। মারধর শেষে আমার গলায় ধারাল দা ধরে এবং আমাকে মুরগি চুরি করেছি বলে স্বীকারোক্তি দিতে বলে। বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে আমি মুরগি চুরি করেছি, বলে স্বীকারোক্তি দেই।
কিশোরী আরও বলেন, আমি কখনও মুরগি চুরি করিনি। আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই।
হাসপাতালে ভর্তি কিশোরীর মা লাইলি বেগম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য তপু বিশ্বাস আমাকে ও আমার মেয়েকে মারধর করেছে। আলাদা ঘরের মধ্যে বসিয়ে হাত বেধে মারধর করেছে। আমার বাচ্চা মেয়েকে যেভাবে মেরেছে তা কোন মা সহ্য করতে পারে না। আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে। আমরা এই অন্যায়ের বিচার চাই।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ধানসাগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য তপু বিশ্বাস বলেন, স্থানীয়রা মুরগি চোর ধরেছে বলে আমাকে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে অনেক লোকজন ছিল। আমি থানার ওসিকে ফোন দিয়েছিলাম। তিনি বলেছেন স্থানীয়দের নিয়ে মীমাংসা করে ফেলতে। ঘটনাস্থলে যারা ছিল তাদের সমন্বয়ে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে শুনি রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আসলে তাদের নির্যাতন করা হয়নি।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. পার্শা সানজানা বলেন, নির্যাতনের শিকার মা-মেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা তাদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের অবস্থা এখন কিছুটা ভালো।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান বলেন, ঘটনা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।