পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৪ ১৮:৩৭ পিএম
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪ ১৯:৩৯ পিএম
সুজন মল্লিক। প্রবা ফটো
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর চেয়ারম্যানের ভাতিজা সুজন মল্লিকের হঠাৎ কোটিপতি হওয়ার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, সুজন অল্প দিনে কী করে এত টাকার মালিক হন? এর টাকার উৎস কোথায়? তারা মনে করে, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি খতিয়ে দেখলে টাকার উৎস বেরিয়ে আসবে।
চেয়ারম্যানের বড় ভাই মো. মোজাহের মল্লিক বলেন, ‘২১ সালের শেষের দিকে ইউপি চেয়ারম্যান সামছুর রহমান মল্লিক নির্বাচিত হওয়ার পর আমাদের ভাতিজা সুজন মল্লিক তিন বছরে এত টাকার মালিক কী করে হলো। সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা তার ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সুজন চিটাগংয়ে চাকরি করত। মহামারি করোনার সময় সে চাকরি ছেড়ে দৈবজ্ঞহাটি এসে ছাগল, গরুর দালালি করত। এতে তার সংসারে টানাটানি লেগে থাকত। আমি তাকে আমার ট্রাকে মাসিক বেতন হিসাবে হেল্পারের কাজ দিয়েছিলাম।’
সংরক্ষিত ইউপি সদস্য কারিমা সুলতানা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘যেখানে ইউপি সদস্যরা বসার জায়গা পায় না, সেখানে চেয়ারম্যানকে মোটরসাইকেলে করে আনা-নেওয়া করায় সুজনকে চেয়ারম্যানের পাশের রুম ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। সুজন তো পরিষদের কোনো কর্মচারী না।’
দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কিসলুর রহমান খোকন বলেন, ‘চেয়ারম্যানের ভাতিজা সুজন মল্লিক একসময় ছাগল ও গরুর দালালি করে সংসার চালাত। এই তিন বছরে সুজন আলাদিনের চেরাগ পেয়েছে। এখন ৪ লাখ টাকার মোটরসাইকেল, ২ লাখ টাকার আইফোন, অর্ধকোটি টাকার বাড়ি করেছে। এটা কী করে সম্ভব?’ তিনি সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে তদন্ত করে সুজনের টাকার উৎস বের করার আহ্বান জানান।
দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘সুজন মল্লিক চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকার সুবাদে সে লোকচক্ষুর আড়ালে এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ চেয়ারম্যানের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা-পয়সা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে গত তিন বছরে কোটি টাকার মালিক হয়েছে।’ এ বিষয়ে তিনি দুদকসহ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চেয়ারম্যানের মোটরসাইকেলচালক ভাতিজা সুজন মল্লিক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। আমি ২০০৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চিটাগাংয়ে একটি কোরিয়ান কোম্পানিতে চাকরি করতাম। সেখানে আমি ৬৯ হাজার ৯৩৪ টাকা বেতন পেতাম। যার সকল প্রমাণপত্র আমার কাছে আছে। পাশাপাশি আমার একটা মাল্টিপারপাস সমবায় সমিতি ছিল। আমি এই সংস্থার সভাপতি ছিলাম। আমার যাত্রা সেখান থেকে শুরু।’ এ সময় তিনি এই প্রতিবেদককে হুমকির সুরে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যদি কোনো লেখালেখি হয়, তাহলে আমি মানহানি মামলা করব।’