নারায়ণগঞ্জ সিটি
সাইফুল ইসলাম সায়েম, নারায়ণগঞ্জ (শহর)
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৪ ১৫:১২ পিএম
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪ ১৫:৫৪ পিএম
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আলী আহাম্মদ চুনকা সড়কের চেয়ারম্যানবাড়ির মোড় থেকে নাগবাড়ি মোড় পর্যন্ত খানাখন্দে ভরা। প্রবা ফটো
পিচঢালাই ও ইট-পাথরের খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দের। একটু বৃষ্টি হলেই সেখানে পানি জমে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) আলী আহাম্মদ চুনকা সড়কের চেয়ারম্যানবাড়ির মোড় থেকে নাগবাড়ি মোড় পর্যন্ত অবস্থা এমন বেহাল অবস্থা। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কের এ অংশ দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানান, আলী আহাম্মদ চুনকা সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। সড়কের ২ নম্বর রেলগেট থেকে চেয়ারম্যানবাড়ির মোড় পর্যন্ত অংশে কোনো খানাখন্দ নেই। এরপর থেকেই দুর্ভোগের শুরু। চেয়ারম্যানবাড়ির মোড় থেকে নাগবাড়ি মোড় পর্যন্ত অসংখ্য খানাখন্দ। সড়কটির সবচেয়ে বেশি বেহাল নাসিকের নবনির্মিত ভবনগুলোর সামনে থেকে দেওভোগ পানির ট্যাঙ্কি মোড় পর্যন্ত। এতটুকু অংশেই অর্ধশতাধিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এবং অযত্ন ও অবহেলায় সড়কটির এমন বেহাল অবস্থা। ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সংস্কারের আশ্বাস দেন। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, চেয়ারম্যানবাড়ির মোড় থেকে নাগবাড়ি পর্যন্ত সড়কের অবস্থা খারাপ। সড়কটির বেশিরভাগ অংশের পিচঢালাই ও ইট-খোয়া উঠে খানাখন্দে ভরে গেছে। সড়ক দিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। অনেকটা হেলেদুলে বিভিন্ন যান চলাচল করছে। বৃষ্টির পানি জমে যাওয়ায় গর্তের আকার বোঝা যায় না। চলাচলের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারী, যাত্রীসাধারণসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের।
মুনছুর আলী নামে এক রিকশাচালক বলেন, পানির ট্যাঙ্কি এলাকার অংশে সড়ক যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কে রিকশা চালাতে গিয়ে যন্ত্রপাতি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। শরীর ব্যথা করে। খানাখন্দের কারণে ঝাঁকুনিতে যাত্রীসাধারণের কোমর ভাঙার উপক্রম হয়। বৃষ্টি হলে রিকশা গর্তে পড়ে যায়।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক মো. নয়ন বলেন, ২ নম্বর রেলগেট থেকে দেওভোগ মাদ্রাসা পর্যন্ত গাড়ি চালাই আমরা। তবে সড়কের এ অংশে আসলে ঝাঁকুনিতে শরীরের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। আমরা অনেক কষ্টে টেনেটুনে গাড়ি নিয়ে পার হতে পারি, তবে পায়ে চালানো রিকশা মাঝেমধ্যেই গর্তে পড়ে যায়। বিভিন্ন সময় ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে। দ্রুত সংস্কার না করলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
নগরীর চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকার বাসিন্দা নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ৬-৭ বছর ধরেই রাস্তাটি এমন বেহাল অবস্থা। সামনে একটি মসজিদ, বৃষ্টির সময় এখানে পানি জমে থাকে। এই পানি মাড়িয়ে নামাজ পড়তে গেলে ওজু থাকে কি না, তাও জানি না। ভাঙা রাস্তার কারণে রিকশা ও অন্যান্য যানবাহন এখানে আসতে চায় না। আমাদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগী ও তাদের স্বজদের।
পানির ট্যাঙ্কি এলাকার বাসিন্দা বাবুল হোসন, সোবাহান ব্যাপারিসহ কয়েকজন বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। মাঝেমধ্যে নাসিক কর্তৃপক্ষ সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ইটের খোয়া ও বালু ফেলে গর্ত ভরাট করে। কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। মানুষের চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মাঝেমধ্যে গর্তে পড়ে বিভিন্ন যানবাহন বিকল হয়ে যায়। তাদের দাবি, সড়কের এ অংশটি দ্রুত স্থায়ীভাবে মেরামত করা হোক।
সড়কের ভাঙা অংশটি নাসিকের ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে। জানতে চাইলে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামান বলেন, রাস্তাটি সংস্কারকাজ শুরুর জন্য কাগজপত্র রেডি আছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার করা হবে।
১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রিয়াদ হাসান বলেন, সিটি করপোরেশনের বাজেটেরও ঘাটতি আছে। বাজেট না হলে কাজটা কীভাবে হবে। গত দুই বছরে আমাদের তেমন কোনো কাজই হয়নি। শিগগিরই পুরো ওয়ার্ডের রাস্তা কার্পেটিং করা হবে।