উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভাইস চেয়ারম্যানের মামলা

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে করা ভাইস চেয়ারম্যানের মামলাটি নথিভুক্ত করেছে পুলিশ। ঘটনার ১১ দিন পর আদালতের নির্দেশে মামলাটি নতিভুক্ত করেছে হাতীবান্ধা থানা।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহারের মধ্যে গত ৭ নভেম্বর উপজেলা পরিষদের ভেতরে বাকবিতণ্ডা, মারধর ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

ওই দিন রাতে জেসমিন নাহার বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৮ জনকে আসামি করে হাতীবান্ধা থানায় অভিযোগ করেন। 

১৪ নভেম্বর উপজেলার ১২ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান হাতীবান্ধা উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করে। 

ঘটনার ১০ দিনেও অভিযোগটি নথিভুক্ত না করায় বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) আদালতের আশ্রয় নেন জেসমিন নাহার। ১২ জনকে আসামি করে লালমনিরহাট জুডিসিয়াল আদালত ৪-এ একটি অভিযোগ করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে নিতে হাতীবান্ধা থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশ পেয়ে রাতেই অভিযোগ নথিভুক্ত করে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ।

এদিকে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। ওই কমিটি গত বৃহস্পতিবার থেকে তদন্ত শুরু করেছে। ওই কমিটির প্রধান লালমনিরহাট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিডিএলজি) রফিকুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম হাতীবান্ধায় এসে উপজেলা চেয়ারম্যান, দুই ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। 

এ বিষয়ে ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার বলেন, ‘টিআর, কাবিখা-কাবিটা কাজের বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে অফিস থেকে বের করে দেয়। পরে তার লোকজন আমাকে মারধর করে। আমার অফিসে হামলা চালায়।’

উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনের দাবি, ‘নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহারের কাছে ২০২০-২১ অর্থবছরে এডিপির নারী উন্নয়ন ফান্ডে একটি প্রকল্পের হিসাব চেয়েছিলাম। এই হিসাব চাওয়ায় জেসমিন ও তার স্বামী সুলতান আহমেদ রাজন আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। আমার প্রতি মারমুখী আচারণ করে।’

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বলেন, আদালতের নির্দেশ পাওয়া মাত্র আমরা এজাহারটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছি। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘ইতোমধ্যে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি গত বৃহস্পতিবার থেকে তদন্ত শুরু করেছে। পুরো বিষয়টি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’