মিয়ানমারে সংঘাত
কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৪ ২০:৫০ পিএম
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪ ২১:২৮ পিএম
রবিবার বিকালে নাফ নদে অনুপ্রবেশের সময় বাধা দিচ্ছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। প্রবা ফটো
মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যেই সংঘর্ষ যেন থামছেই না। রাতে-দিনে গোলাগুলি চলছে। ওপারের বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কাঁপছে এপারের সীমান্তের বাড়িঘর। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা।
মিয়ানমারের এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড। এতদিন অস্ত্রসহ পালিয়ে আসা মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যদের অনুপ্রবেশের সুযোগ দিলেও এখন আর তা দিচ্ছে না।
রবিবার (১৪ জুলাই) এক দিনে পৃথকভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারী চারটি ট্রলার বোঝাই ৭০ জন বিজিপি সদস্যকে ফিরিয়ে দিয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও কোস্ট গার্ড।
এর মধ্যে রবিবার সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের নাফ নদ জলসীমা দিয়ে দুটি ট্রলারে করে বিজিপির অন্তত ৩০ জন্য সদস্য অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায়। কিন্তু নাফ নদে দায়িত্বরত কোস্ট গার্ড সদস্য ট্রলার দুটিকে প্রবেশ করতে দেয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের লোকজন জানিয়েছেন, কোস্ট গার্ড সদস্য অনুপ্রবেশকারী দুটি ট্রলারকে ফিরে যেতে বাধ্য করে। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টার পর অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারী বিজিপি সদস্য নাফনদ হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
অপরদিকে, রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে টেকনাফের জালিয়াপাড়ার ট্রানজিট ঘাট সংলগ্ন নাফ নদের মোহনা হয়ে দুটি ট্রলার করে আরও ৪০ জন বিজিপি সদস্য অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায়। কিন্তু তাদেরও ফিরে যেতে বাধ্য করেছে কোস্ট গার্ড সদস্যরা।
অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় সীমান্ত নিকটবর্তী লোকজনের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নাফ নদের মাঝামাঝি ট্রলারে অবস্থান করে বিজিপি সদস্যরা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। কিন্তু কোস্ট গার্ডের পক্ষে থেকে ফিরে যেতে আহ্বান করা হচ্ছে। যদিও ওই সময় নাফ নদের ওপারে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের দায়িত্বশীলরা।
তবে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের পক্ষে কিছু না জানালেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও লোকজন কিছু সংখ্যক বিজিপি সদস্য অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় তাদের ফিরে যেতে বাধ্য করার বিষয়টি জেনেছেন।
এর আগে, শনিবার (১৩ জুলাই) সীমান্ত দিয়ে ২৮ জন বিজিপি সদস্য এবং গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দুদিনে দেড় শতাধিক বিজিপি সদস্য পালিয়ে এলে তাদের কাছ থেকে অস্ত্র জমা নিয়ে বিজিবি হেফাজতে নেয়। তাদের দমদমিয়া বিজিবির ফাঁড়ি সংলগ্ন এলাকায় রাখা হয়েছে। যদিও হেফাজতের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি নয় বিজিবি ও কোস্ট গার্ড।