প্রতিদিনের বাংলাদেশে প্রতিবেদনের পর
রাজবাড়ী সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৪ ২০:৩৩ পিএম
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪ ২০:৩৮ পিএম
রাজবাড়ীতে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের নামে বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের প্রায় আড়াই মাস পর তড়িঘড়ি করে শিক্ষা মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। রবিবার (১৪ জুলাই) সকালে রাজবাড়ী টাউন মক্তব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (বর্ধিত ভবন) মেলার উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মহুয়া শারমিন ফাতেমা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিন্দ্র কুমার মণ্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা, কালুখালী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১১ জুলাই প্রতিদিনের বাংলাদেশের অনলাইন পোর্টালে ‘শিক্ষামেলা না করেই টাকা তুলে নেন শিক্ষা কর্মকর্তা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই মূলত নড়েচড়ে বসেন শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা। তারা গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, রবিবার মেলার উদ্বোধন করা হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলায় চারটি স্টল রয়েছে। তবে দর্শনার্থীদের আনাগোনা চোখে পড়েনি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানের ব্যানারে কোনো তারিখও উল্লেখ নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক বলেন, শিক্ষা সপ্তাহ মে মাসে হওয়ার কথা ছিল। আপনারা শুধু শুধু পত্রিকায় নিউজ করে আমাদের ভোগান্তিতে ফেলছেন। এখানে আসতে নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এসব নামমাত্র পালন না করলেও হতো। কোনো প্রচারণা ছাড়াই শুধু ছবি তুলে এ আয়োজন সম্পন্ন হবে। বরাদ্দ হালাল করতেই এ কাজ করেছেন।
নাম না প্রকাশের শর্তে একজন প্রধান শিক্ষক বলেন, জেলা জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ মে মাসে হওয়ার কথা থাকলেও রবিবার দায়সারাভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষকদের নিয়ে টাউন মক্তব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইনোভেশন মেলা হয়। ওই মেলায় আলাদা বরাদ্দ থাকলেও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নাশতার আয়োজন করেন। এতে পুরস্কার হিসেবে বিনামূল্যের শিক্ষক সহায়তা বই দেওয়া হয়। এ মেলার পুরো টাকাই তিনি (অহিন্দ্র কুমার মণ্ডল) পকেটস্থ করেন। শিক্ষা অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। সব কাজেই ফুয়েল ছাড়া ফাইল নড়ে না।
নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন শিক্ষক বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসারকে অফিসে পাওয়া যায় না। তিনি সরকারি গাড়ি নিয়েই বাসায় যান। বুধবার গেলে আসেন রবিবার দুপুরে। এভাবেই অফিস করেন। প্রয়োজন হলে সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসাররা সহযোগিতা করেন। আর শিক্ষা সপ্তাহ গত বছর এক দিন হলেও কোনো পুরস্কার দেয়নি। এ বছর কী করবে এখনও বলা যাচ্ছে না। ব্যানারে কোনো তারিখ না দিয়ে কোনো মতে স্টল সাজিয়েছেন। কোনো প্রচারণা নেই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মেলা উদ্বোধনের পরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অহিন্দ্র কুমার মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।