নোয়াখালী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৪ ২০:১৭ পিএম
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪ ২১:৫৩ পিএম
পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নোয়াখালীর ১০ ভিক্ষুক পেয়েছেন পণ্যসহ ভ্যানগাড়ি, চটপটির দোকান ও গাভি। প্রবা ফটো
হাত পেতেও মিলত না ওষুধের খরচ। কষ্টে জুটত দুমুঠো ভাত। হুইলচেয়ারে বসে করতেন ভিক্ষাবৃত্তি। জীবনের পঞ্চাশটি বছর পেরিয়ে রেহাই পেলেন হাজেরা বেগম। তার মতো নোয়াখালীর দশজন নারী-পুরুষ মুক্তি পেলেন ভিক্ষাবৃত্তির অভিশাপ থেকে। পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার বিভিন্ন পণ্যসহ ভ্যানগাড়ি, চটপটির দোকান ও গাভি। রবিবার (১৪ জুলাই) বিকালে সমাজসেবা কার্যালয়ের সামনে এসব হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।
উপকারভোগীরা হলেন, নোয়াখালী পৌরসভার জাহানারা বেগম, নুর জাহান, হাজেরা খাতুন, বেবী বেগম, হাজরা খাতুন, জাহেরা খাতুন, হোসনেয়ারা বেগম, সামছুল হক, মো. হারুন ও ফরিদ আহম্মদ।
ভবিষ্যতে ভিক্ষা না করার শপথ নিয়ে নুর জাহান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে মালামালসহ ভ্যানগাড়ি উপহার দিয়েছেন। গাড়িটি মেয়ের জামাইকে দেব। সে চালিয়ে আমাকে টাকা দেবে। আর ভিক্ষা করব না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করব।’
বেবী বেগম বলেন, ‘আমি অসুস্থ। ভিক্ষাও পাই না। ভ্যানগাড়িটি পেয়েছি। খুব খুশি লাগছে। বাড়ির সামনে দোকান দেব। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’
ফরিদ আহম্মদ বলেন, ‘ছেলে মারা গেছে। অভাবের সংসার। একটা ছেলেকে ভিক্ষা করে পড়াই। প্রধানমন্ত্রী গাড়ি দিয়েছেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করব। তিনি শেখ হাসিনার ভালো করুক। আমার গাড়িতে মালামাল আছে জুতা। এগুলো বিক্রি করে সংসার চালাব। আর ভিক্ষা করব না।’
ডিসি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ভিক্ষাবৃত্তির অভিশাপ থেকে এ দশজন মুক্ত হলেন। আর ভিক্ষা করতে হবে না তাদের। নারীরা শেষ বয়সে বোঝা হয়ে পড়েন। কেউ তাদের পাশে দাঁড়ায় না। ছেলে-মেয়ে সন্তানরা খোঁজখবর নেয় না। তাই আমরা ভিক্ষুক নারীদের পুনর্বাসন করছি। তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। এটাই বড় আনন্দের বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভিক্ষুক পুনর্বাসন করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার। তিনি নানা প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও আশ্রয়হীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছেন। প্রায় শতাধিক ভিক্ষুককে আমরা প্রধানমন্ত্রীর উপহার গাড়ি দিয়েছি। দ্রুত নোয়াখালীকে ভিক্ষুক মুক্ত করতে পারব।’
নোয়াখালী জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ শাহী নেওয়াজের সভাপতিত্বে নোয়াখালী পৌরসভার প্যানেল মেয়র রতন কৃষ্ণ পাল, নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের মঞ্জু, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ আবুল কাশেম, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (কার্যক্রম) মোহাম্মদ আব্দুর রহমান, শহর সমাজসেবা অফিসার মো. আব্দুল হামিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।