ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪ ২১:৫১ পিএম
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৪ ২১:৫৮ পিএম
অষ্টগ্রাম থানার এএসআই আব্দুল্লাহ আল মোসাব্বির। প্রবা ফটো
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্ত্রীকে দিয়ে ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায়ের অপরাধে অষ্টগ্রাম থানার এএসআই আব্দুল্লাহ আল মোসাব্বিরকে শাস্তি হিসেবে জেলা পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়েছে। শনিবার (১৩ জুলাই) কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন ক্রাইম) আল আমিন হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এএসআই মোসাব্বির জেলার অষ্টগ্রাম থানায় কর্মরত। এর আগে তিনি দেড় বছর ভৈরব থানায় ছিলেন। ওই সময় উপজেলার শ্রীনগরে চাঁদনী আক্তার নামে এক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। পরবর্তীতে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য হন। সেই সুবাদে মোসাব্বির প্রায়ই ভৈরবের বিভিন্ন ক্রাইম পয়েন্টে এসে ডিবির পরিচয়ে বিভিন্ন অপকর্মে যুক্ত হন। এমনই এক ঘটনা ঘটে সাইপ্রাসপ্রবাসী বাচ্চু তালুকদারের সঙ্গে। তিনি উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ মে বিকালে মোসাব্বিরের যোগসাজশে বাচ্চু তালুকদারের দুই বন্ধু সালাহউদ্দিন ও শফিক মিয়া পৌর শহরের কামাল সরকারের বাড়ি সংলগ্ন শফিক মিয়ার আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর এএসআই মোসাব্বির ও তার সঙ্গে থাকা দুজন ডিবি পরিচয়ে বাচ্চু তালুকদারকে মাদকসেবনের অভিযোগে হাতকড়া পরান। এ ছাড়াও মোসাব্বিরের স্ত্রী চাঁদনী বেগমকে তার প্রেমিকা হিসেবে দাবি করেন। এ ঘটনা দফারফা করতে বাচ্চু তালুকদারের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন মোসাব্বির। ঘটনাস্থল থেকে ছাড়া পেয়ে বাচ্চু তালুকদার ভৈরব থানার এসআই সাইদুর রহমানকে জানান। পরবর্তীতে মোসাব্বির ২৫ হাজার টাকা ফেরত নিয়ে দেন। বাকি ৪৫ হাজার টাকা চাইলে মোসাব্বির বাচ্চু তালুকদারকে ভয়ভীতি দেখান।
এ ঘটনায় গত ৯ জুলাই বাচ্চু তালুকদার কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরাবর এএসআই মোসাব্বির ও তার দুই বন্ধুকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
এ বিষয়ে ব্যক্তি বাচ্চু তালুকদার বলেন, সাইপ্রাস থেকে আমি অনেক টাকা নষ্ট করে দেশে এসেছি। সম্প্রতি ৪০ লাখ টাকার একটি সম্পত্তি বিক্রি করেছি। এই টাকার লোভে আমার দুই বন্ধু এএসআই মোসাব্বির ও তার স্ত্রী চাঁদনীর মাধ্যমে আমাকে ব্ল্যাকমেল করে। ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে ২৫ হাজার ফেরত দিয়েছে। বাকি টাকা চাইলে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন তিনি।
এ ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত এএসআই মোসাব্বিরের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। তাকে খুদেবার্তা দিলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।
তবে বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে ভৈরব থানার এএসআই সাইদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি সত্য। বিষয়টি জানতে পেরে এএসআই মোসাব্বিরের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে বাচ্চু তালুকদারকে ফেরত দিয়েছি।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন ক্রাইম) আল আমিন হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই অষ্টগ্রাম থানা থেকে এএসআই মোসাব্বিরকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।