× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চণ্ডিপুর-বাঘমারা সড়ক

রাতে ঢালাই, সকালেই উঠে গেল কার্পেটিং

রহিম শুভ, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪ ১৬:২৩ পিএম

রাতের আঁধারে কাজ করার পর সকালেই উঠে যায় রাস্তার কার্পেটিং। বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিপুর-বাঘমারা সড়কের চণ্ডিপুর এলাকা। প্রবা ফটো

রাতের আঁধারে কাজ করার পর সকালেই উঠে যায় রাস্তার কার্পেটিং। বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিপুর-বাঘমারা সড়কের চণ্ডিপুর এলাকা। প্রবা ফটো

এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে তড়িঘড়ি করে রাতের আঁধারে রাস্তার কার্পেটিং করার অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। দায়সারাভাবে কাজ করায় পরদিন সকালে হাঁটার সময়ে জুতার সঙ্গে উঠে যায় কার্পেটিং। আর এমন অবস্থা উপজেলার চণ্ডিপুর-বাঘমারা সড়কের। এতে করে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বিভিন্ন যানবাহনের চালকসহ পথচারীরা। এ নিয়ে অভিযোগ করার পরও প্রতিকার পাননি স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংস্কারকাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন একাধিকবার উপজেলা প্রকৌশলী মাইদুল ইসলামকে জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর যোগসাজশে কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এমন অবস্থা হয়েছে। কাজ শেষে বিল পাইয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা সহযোগিতা করেন। ধুলামিশ্রিত পাথর ব্যবহারের সময় স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও তা কর্ণপাত করা হয়নি।

পীরগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চণ্ডিপুর-বাঘমারা সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার মিটার অংশ ১৫ মিলিমিটার সিলকোড কার্পেটিং করার কাজ পান বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আব্দুস সামাদ নামে এক ঠিকাদার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিয়ম না মেনে এলজিইডিকে ম্যানেজ করে কয়েক দিন ধরে রাতের আঁধারে বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ করেন ঠিকাদারের লোকজন। গত বুধবার তারা ঢালাইয়ের কাজ শেষ করেন। পরদিন (গত বৃহস্পতিবার) সকালে স্থানীয়রা সড়ক দিয়ে হাঁটলে জুতার সঙ্গে উঠে আসে কার্পেটিং। 

চণ্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, রাতে ঠিকাদারের লোকজন রাস্তার কাজ করেন। সকাল হাঁটতে গেলে জুতার সঙ্গে রাস্তার কার্পেটিং উঠে যায়। আমরা মনে করেছি, মেরামত করলে হাঁটাচলায় সুবিধা হবে। এখন দেখি আরও বেশি ভোগান্তি হচ্ছে। আবুল হাসান নামে আরেকজন বলেন, রাতে কার্পেটিং না করতে ঠিকাদারের লোকজনকে বাধা দেই। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। রাতের আঁধারে রাস্তায় নিম্নমানের পিচের কার্পেটিংয়ের কাজ করে; যা হাত দিয়ে টান দিলে বা পা দিয়ে ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে। জুতার সঙ্গে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। গত কয়েক দিনে রাস্তার বেশিরভাগ কার্পেটিং উঠে গেছে। উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

মো. রায়হান নামে এক যুবক বলেন, এই রাস্তার কাজে শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়ে আসছে। রাস্তার কার্পেটিংয়ে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে হাত দিলেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। এলাকার লোকজন ঠিকাদারকে ভালোভাবে কাজ করতে বললেও তিনি কোনো কথা শোনেননি। 

আকাশ আলী নামে একজন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক বলেন, মেরামত করছে রাস্তাটা এক দিন তো টিকবে। রাতে মেরামত করছে পরদিন সকালে গাড়ির চাকায় কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। এতে আমাদের আরও ভোগান্তি বেড়ে গেল। লিমন হোসেন নামে এক পথচারী বলেন, কোনো গাড়ি এসে ব্রেক করলে রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। ঠিকাদার দায়সারাভাবে রাস্তার কাজ করে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। সরকার এত টাকা খরচ করে রাস্তা করেছে, কিন্তু এলজিইডি ও ঠিকাদারের দুর্নীতির কারণে সব টাকা জলে গেল। যেখানে হাত দিয়ে রাস্তার কার্পেট তোলা যাচ্ছে, সেখানে ভারী যানবাহন কীভাবে চলবে। এলজিইডি-ঠিকাদারের জন্য সরকারের বদনাম। নিম্নমানের পাথর, ইট, বালু, খোয়া ব্যবহার করে রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী করে ঠিকাদার চলে গেছেন। আমরা এই অনিয়মের বিচার চাই। আমাদের দাবি ভালোভাবে রাস্তার কাজ করা হোক। যাতে রাস্তাটি দীর্ঘস্থায়ী হয়।

অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার আব্দুস সামাদ বলেন, ‘কোনো সমস্যা হলে এলজিইডির সঙ্গে কথা বলে পরে কাজ করা হবে।’ পীরগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি ভালোভাবে কাজ বাস্তবায়ন করার। এলাকার মানুষ অভিযোগ করেছিল। তখন কাজ ভালোই হচ্ছিল। এখন কেন কাপের্টিং উঠে যাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা