পিএসসির প্রশ্নফাঁস
নোয়াখালী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৪ ১৮:৫৯ পিএম
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৪ ১৯:১৬ পিএম
অফিস সহায়ক মো. সাজেদুল ইসলাম। প্রবা ফটো
সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৭ জনের একজন অফিস সহায়ক মো. সাজেদুল ইসলাম (৪১)। তিনি নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মৃত সামছুল আলমের ছেলে। গ্রামের মানুষ তাকে তেমন একটা চেনে না। তবে এলাকায় গেলে স্থানীয়দের সহযোগিতা করেন। স্থানীয়রা বলছে, তার বোন ও ভগ্নিপতি বিসিএস ক্যাডার হয়েছে। সেই খুশিতে এলাকায় মিষ্টিও বিতরণ করেছেন তিনি।
বুধবার (১০ জুলাই) উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য চরবাটা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, গ্রামের বাড়িতে খুব একটা আসেন না সাজেদুল ইসলাম। মা ও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রাজধানীর মতিঝিল এলাকার এজিবি কলোনির কোয়ার্টারে তার বসবাস। তবে বিশাল জায়গা নিয়ে তার বাড়ি তৈরি করার পরিকল্পনা ছিল। সে অনুযায়ী তৈরি করছিলেন সীমানাপ্রাচীর। বাড়িটি তার মামা ছেরাজুল হক দেখাশোনা করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সিদ্দিক আলম বলেন, ‘সাজেদুল ইসলাম শরীফ এলাকার মানুষের কাছে দানশীল ও দেবতা হিসেবে পরিচিত। কিছু দিন আগে উনার বোন ও ভগ্নিপতি একসঙ্গে বিসিএস ক্যাডার হওয়ায় এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেন। উনিও অনেক লোককে চাকরি দিয়ে থাকেন শুনতাম। আমি ভাবতাম উনি পিএসসির বড় কর্মকর্তা, পরে শুনি উনি অফিস সহায়ক।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলে, ‘তিনি গাড়িতে চলাফেরা করেন। শুনলাম তার বউয়েরও নাকি ব্যক্তিগত গাড়ি আছে। নিজে কোটি টাকা কামাই করেন। ডুপ্লেক্স বাড়ি করার প্ল্যান করে বাউন্ডারির কাজ চলমান। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো, এলাকার মানুষ তাদের টাকার গল্প করে বাট সততার না। দেশ, সমাজে শিক্ষার চেয়ে টাকার মূল্য যে বেশি।’
আরিফুর রহমান নামের আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘পিএসসির প্রশ্নফাঁসকাণ্ডে জড়িত সাজেদুল এলাকায় অনিয়মিত। তারা দুই ভাই ও দুই বোন। তার বাবা ২০১৯ সালে মারা যান। তিনি পরিবহন পুলের গাড়িচালক ছিলেন।’
সাজেদুলের মামা ছেরাজুল হক বলেন, ‘আমার ভাগিনারা দুই ভাই দুই বোন। তারা বাড়িতে তেমন একটা আসে না। আসলেও সবার সঙ্গে মেশে না। দোকানপাটেও কম যায়। তাদের বাড়ি চরক্লার্ক ইউনিয়নে। এটা তার নানাবাড়ি। কোনো বাড়িতেই তাদের ঘর নেই। তার বাবা সামছুল আলম এই জায়গাটি কিনেছিলেন। মাত্র সীমানাপ্রাচীর তোলা হচ্ছে। এখানে বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। সে তার বোন আর ভগ্নিপতির চাকরি হওয়ায় পরিচিতদের মিষ্টি খাইয়েছে। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’
চরবাটা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘সাজেদুল ইসলামের মূল বাড়ি চরক্লার্ক ইউনিয়নের আবদুর রব বাজারের পাশে। আমার ওয়ার্ডে তারা নতুন বাড়ির জন্য জায়গা কিনেছে। এটা তার নানার বাড়ির এলাকা। তার বাবা জীবিত থাকাকালীন তার মায়ের জন্য জমিটি কিনেছিলেন বলে জেনেছি। বর্তমানে বাড়ির কাজ ধরার পরিকল্পনা ছিল। সে অনুযায়ী কাজও শুরু হয়েছে। এর ভেতর শুনলাম সে গ্রেপ্তার হয়েছে।’