মানবিক আবেদন
গোপালগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৪ ১৮:৫৪ পিএম
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৪ ১৮:৫৭ পিএম
দুই শিশু সন্তানসহ সাদিয়া বেগম। প্রবা ফটো
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী বাজারের চা বিক্রেতা জামাল মোল্লা। পাঁচ বছর আগে একমাত্র মেয়ে সাদিয়াকে বিয়ে দিয়েছিলেন খুলনার তেরখাদা উপজেলার কৃষক রমজান খানের সঙ্গে। দুটি সন্তানও হয়েছে সাদিয়ার। অভাব-অনটনের মধ্যেও স্বামীর সঙ্গে সুখেই ঘর করছিলেন সাদিয়া। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও টের পাননি কখন যে মারণব্যাধি বাসা বেঁধেছে তার শরীরে। যখন টের পেলেন তখন তার একটি কিডনি অকেজো, আরেকটার ৫০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে।
চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুপথযাত্রী দুই সন্তানের জননী সাদিয়া। সন্তানদের জন্য বেঁচে থাকার তীব্র আকুতি। সাদিয়ার কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ১৭ লাখ টাকার প্রয়োজন। স্বামী বা স্বজনদের সামর্থ্য নেই এত টাকা জোগাড় করার। তাই চা বিক্রেতা জামাল একমাত্র মেয়েকে বাঁচাতে সাহায্যের আশায় ধরনা দিচ্ছেন বিভিন্ন মহলে।
সাদিয়ার বাবা জামাল মোল্লা বলেন, দ্বিতীয় সন্তান জন্মের পর হঠাৎ সাদিয়ার সারা শরীর ফুলে যায়। তখন তার স্বামী খুলনায় আড়াইশ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা জানান, সাদিয়ার কিডনিতে সমস্যা রয়েছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে হবে। ঢাকায় জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, সাদিয়ার একটি কিডনি পুরোপুরি নষ্ট ও আরেকটি ৫০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ১৭ লাখ টাকা লাগবে।
জামাল মোল্লা বলেন, এ কথা জানার পর এক বছর আগে দুই সন্তানসহ সাদিয়াকে তার বাড়িতে রেখে যান স্বামী রমজান। তারপর স্ত্রী-সন্তানের আর কোনো খোঁজখবর নেননি রমজান। সঞ্চিত অর্থ ও ধারদেনা করে এতদিন মেয়ের চিকিৎসা চালিয়েছেন। এখন শুধুমাত্র ভিটেবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। টাকার অভাবে বর্তমানে সাদিয়ার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।
জামাল মোল্লা জানান, ইতোমধ্যে সাদিয়ার ডানপাশের কিডনি কেটে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আর বামপাশের কিডনি ৫০ শতাংশ নষ্ট। সাদিয়ার অবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় চিকিৎসা করানো তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। একমাত্র মেয়ে বাড়িতেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তাই বিত্তবান ও সহৃদয় ব্যক্তিদের কাছে মেয়েকে বাঁচাতে এগিয়ে আসার আকুল আবেদন জামাল মোল্লার।
ইসলামী ব্যাংকের হিসাব নং-২০৫০৪০০০২০০৪৯১২০৮ (সাদিয়ার মা খাদিজা বেগম) ও সাদিয়ার বাবা জামাল মোল্লার বিকাশ নাম্বারে ০১৯৭৯-১৪১৩০০ সাহায্য পাঠাতে পারেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, চিকিৎসকরা সাদিয়ার কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন। কিডনি প্রতিস্থাপন করা হলে সাদিয়ার জীবন রক্ষা পাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈনুল হক বলেন, বিষয়টি তার আগে জানা ছিল না। এখন জানতে পারলেন। উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের যথাসম্ভব সাহায্য করা হবে।