বান্দরবান প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪ ১৫:২১ পিএম
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৪ ১৯:৪০ পিএম
বান্দরবানে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে বান্দরবান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড ক্যসিংঘাটা এলাকার বাসিন্দারা। প্রবা ফটো
টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে দেখা দিয়েছে পাহাড় ধসের আশঙ্কা। এর ফলে আতঙ্কে রয়েছে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী বাসিন্দারা। যেকোনো সময় পাহাড় ধসে ঘটতে পারে প্রাণহানির ঘটনা। শহরের টাংকি পাহাড়, বালাঘাটা, কালাঘাটা, ইসলামপুর, হাফেজঘোনা, বনরুপা পাড়াসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাজারও মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ভারী বর্ষনের কারণে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পানিতে তলিয়ে যেতে পারে শহরের নিমাঞ্চল।
সোমবার (১ জুলাই) বান্দরবানে সকাল থেকে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সকাল ৬টা পর্যন্ত ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বান্দরবান জেলায় গত ৫ বছরে পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৬৩ জন। শুধু গত বছরে পাহাড় ধসে ১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এখনও বান্দরবানে শতাধিক পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে কয়েক হাজার মানুষ। প্রায় প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন অবৈধ স্থাপনা। পাহাড় ধসে মৃত্যু কমাতে সে সময় প্রশাসন নানান পরিকল্পনার কথা বললেও কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি।
কুহালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মংপু মারমা বলেন, ‘বিরুপ আবহাওয়া মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের গতকাল রবিবার থেকে কুহালং ইউনিয়নে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।’
বান্দরবান মৃত্তিকা সংরক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে একটানা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধস হতে পারে। সেজন্য সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।’
বান্দরবান আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল বলেন, ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী ৭২ ঘণ্টা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত সর্বমোট ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ভারী বর্ষনের কারণে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পানিতে তলিয়ে যেতে পারে শহরের নিমাঞ্চল।’
বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মো. শামসুল ইসলাম বলেন, ‘পৌর এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে রবিবার থেকে পৌর এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। পৌর এলাকায় ১৯টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখা আছে। আর পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পরর্বতী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দীন বলেন, ‘পাহাড়ে ঝুকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে জেলা শহরসহ প্রতিটি ইউনিয়নে সতর্কতা অবলম্বন ও নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। জেলার ৭ উপজেলায় ২১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।’
এর আগে গত ২৯ জুন নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ধসে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।