ফরিদপুর সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৩৭ পিএম
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৩৯ পিএম
পিটুনির শিকার পুলিশ সদস্য। ছবি : প্রবা
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় চাঁদা দাবির অভিযোগে স্থানীয়দের পিটুনির শিকার হয়েছেন পুলিশের এক বরখাস্ত সদস্য। পরে তাকে ভাঙ্গা থানায় সোপর্দ করা হয়। কোনো লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
তবে ‘অশালীন’ কাজের প্রতিবাদ করায় ওই পুলিশ সদস্য স্থানীয়দের রোষানলে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) হেলাল উদ্দিন ভুঁইয়া।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরের দিকে ভাঙ্গা হাইওয়ে ইন্টারসেকশনের ফ্লাইওভার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ৯টার দিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছে ভাঙ্গা থানা পুলিশ।
পিটুনির শিকার পুলিশের পরিচয় নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মারুফ হোসেন জানান, ওই পুলিশ সদস্যের নাম শিমুল। তিনি ময়মনসিংহ রেঞ্জে রিজার্ভ ফোর্সের একজন সদস্য। প্রায় এক বছর সাময়িকভাবে বরখাস্ত রয়েছেন তিনি। তার বাড়ি নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলায়। তার শ্বশুরবাড়ি ভাঙ্গার হামিরদী গ্রামে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সুরুজ মোল্লা বলেন, ‘হঠাৎ চেঁচামেচির শব্দ শুনে ফ্লাইওভারের ওপরে এগিয়ে গিয়ে দেখি ২০-৩০ জন লোক একজনকে মারছে। পিটুনির শিকার ব্যক্তি নিজেকে পুলিশের কনস্টেবল বলে পরিচয় দেন। পরে সেখান থেকে তাকে ভাঙ্গা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে নেওয়া হয়। সেখানে ভাঙ্গা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পরিতোষকে খবর দিয়ে ওই ব্যক্তিকে থানায় সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।’
ওই পুলিশ সদস্যের চাঁদা দাবির বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা অমিত মালোর অভিযোগ, ‘গোলচত্বরে ঘোরা-ফেরা করছিলাম। তখন আমার বাড়ি-ঘর কোথায় জানতে চান শিমুল। আমি পরিচয় দিলে তিনি আমার কাছে এক হাজার টাকা চান। আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন তিনি এবং থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। আমি তার পা ধরে আমাকে থানায় নিয়েন না বলে বারবার অনুরোধ করি। আমার চিৎকার শুনে একপর্যায়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে এবং শিমুলকে মারধর করে।’
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয়দের সঙ্গে বরখাস্ত পুলিশ সদস্য শিমুলের ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। কোনো পক্ষের লিখিত অভিযোগ না থাকায় সোমবারই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) হেলাল উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ‘শিমুলের শ্বশুরবাড়ি ভাঙ্গায়। তিনি ভাঙ্গা থেকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য ভাঙ্গা ইন্টারসেকশনে গাড়ির অপেক্ষায় ছিলেন। তখন স্থানীয় অমিত মালো ও তার বান্ধবীকে মহাসড়কের পাশে প্রকাশ্যে অশালীন অবস্থায় দেখতে পান শিমুল। এর প্রতিবাদ করলে অমিত মালোর কয়েক বন্ধুসহ স্থানীয়দের রোষানলে পড়েন শিমুল। এ সময় স্থানীয়রা তাকে মারধর করেন। খবর পেয়ে শিমুলকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। এ বিষয়ে কোনো পক্ষের লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সোমবার রাত ৯টার দিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’