হত্যার পর মাটিচাপা
সাভার প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৪ ১৯:১০ পিএম
আপডেট : ১১ জুন ২০২৪ ১৯:২৭ পিএম
মঙ্গলবার সাভারে ঘর খুঁড়ে ৮ ফুট নিচ থেকে মানুষের মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার করে ডিবি। প্রবা ফটো
সাভারে আলোচিত সীমা হত্যার রহস্য উদঘাটনে গিয়ে পাওয়া দ্বিতীয় মরদেহের সন্ধানে চালানো দুই দিনের অভিযান শেষ হয়েছে। অভিযানে অভিযুক্ত মাদক কারবারি স্বপনের বাড়ি থেকে মানুষের মাথার খুলিসহ হাড়গোড় উদ্ধার করেছে ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় স্বপনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত দ্বিতীয় দফার অভিযানে সাভার আনন্দপুর সিটিলেন এলাকার স্বপনের দুই তলা বাড়ির নিচতলা খুঁড়ে মরদেহের এসব হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।
এর আগে সোমবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া প্রথম দফার অভিযান রাতে বিভিন্ন কারণে স্থগিত করা হয় এবং ওই বাড়িতে পুলিশি পাহারা বসানো হয়।
স্থানীয়দের ধারণা, উদ্ধার হওয়া মাথার খুলি ও হাড়গুলো ১৪ মাস আগে নিখোঁজ হওয়া সাভার পৌরসভার ইমান্দিপুরের সেলামত মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল হোসেন ওরফে টোনোর।
তবে পুলিশ বলছে, উদ্ধার হওয়া মাথার খুলি ও হাড়গুলো টোনোর কিনা তা ডিএনএ পরীক্ষার পর জানা যাবে।
গ্রেপ্তার মাদক কারবারি স্বপন সাভার পৌরসভার ইমান্দিপুরের শাহজাহানের ছেলে। সে সাভারে চিহ্নিত মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত।
সাভারের আনন্দপুর সিটিলেন এলাকার স্বপনের দ্বিতল বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির প্রবেশপথ বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে অভিযান পরিচালনা করা হয়। বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করলেও ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রায় ৮ ফুট মাটি খুঁড়ে মরদেহের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।
ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে একটি হত্যা মামলার তদন্ত করতে স্বপনের সহযোগী সাইফুল নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বিরুলিয়ার বাড়ির পাশ থেকে সীমা বেগমের মরদেহ মাটিচাপা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মূল হোতা স্বপনকে গ্রেপ্তার করে তার সাভারের বাড়ির নিচতলার মেঝের নিচে পুঁতে রাখা মরদেহের তথ্য পায় পুলিশ। সেই মরদেহের সন্ধানে সোমবার থেকে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে মরদেহের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।
টোনোর চাচা বরকত মিয়া বলেন, ‘আমার ভাতিজাকে স্বপন হত্যা করে পুঁতে রেখেছিল। হাড়গোড়ের পাশ থেকে টোনোর জামাকাপড় উদ্ধার করেছে পুলিশ। আমরা নিশ্চিত হয়েই বলছি, এসব কাপড় আমার ভাতিজার।’
ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, ‘আমরা তথ্য অনুযায়ী আজও তল্লাশি করি। বিকাল ৫টার দিকে মরদেহের মাথার খুলি ও হাড়গোড় পাওয়া যায়। তবে এটি কার মরদেহ ছিল তা তদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
গত বছরের এপ্রিলের ২১ তারিখে টোনোর বাবা সেলামত মিয়া সাভার মডেল থানায় ছেলে নিখোঁজ হওয়ার সাধারণ ডায়েরি করেন। এর আগে গত বছরের ১৯ এপ্রিল বাসার পাশ থেকে নিখোঁজ হয় টোনো। এরপর টোনোর খোঁজে ৩০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে বিভিন্ন স্থানে পোস্টার, মাইকিং করে পরিবার। কিন্তু তার সন্ধান মেলেনি।