সিলেট অফিস
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪ ১৭:৪৫ পিএম
আপডেট : ০৯ জুন ২০২৪ ১৮:৩১ পিএম
ভারী বৃষ্টিতে এক সপ্তাহের মধ্যে দুবার তলিয়ে গেল সিলেট নগরীর দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা। শনিবার (৮ জুন) রাত সাড়ে ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলা মাত্র ৩ ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও সড়কে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি দেখা দেয়। এনিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুবার জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহাতে হলো নগরীর বাসিন্দাদের।
এর আগে, গত ২ জুন রাতে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পানিতে তলিয়ে যায় নগরীর শতাধিক এলাকা। এতে দুর্ভোগে পড়েন এসব এলাকার বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। রাত ১২টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি চলে। এতে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পানি ঢুকে পড়ে বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে। পানিতে তলিয়ে যায় সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলা। এতে দুর্ভোগে পড়েন রোগীরা। অবশ্য রবিবার সকালে অধিকাংশ এলাকা থেকে পানি নেমে যায়।
শনিবার রাত ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর শিবগঞ্জ, সোনারপাড়া, দরগামহল্লা, পায়রা, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, কাজলশাহ, মেডিকেল রোড, বাগবাড়ি, কালীবাড়ি, হাওলাদারপাড়া, সোবহানীঘাট, উপশহর, যতরপুর, তেরোরতন, কেওয়াপাড়া, সাগরদিঘিরপার, পাঠানটুলা, মিয়া ফাজিলচিশত, জালালাবাদ, হাউজিং এস্টেট, শাহি ঈদগাহ, ঘাসিটুলা, হাওয়াপাড়া, মীরাবাজার, মাছিমপুর, জামতলা ও তালতলা এলাকায় পানি থইথই করছে। ঘরমুখী মানুষেরা যানবাহনের অভাবে পানি মাড়িয়ে হেঁটেই ফিরছিলেন। এসব এলাকার বেশিরভাগ বাসায় পানি ঢুকে পড়ে। রাস্তার মধ্যে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি ছিল। অনেক বাসাবাড়িতে বৃষ্টির পানির সঙ্গে ভেসে ময়লা-আবর্জনাও ঢুকে পড়েছে। সব মিলিয়ে চরম ভোগান্তি পোহান লোকজন
সোনারপাড়ার বাসিন্দা জুনেদ আহমদ বলেন, নাইওরপুল থেক শিবগঞ্জ পয়েন্ট পর্যন্ত মেইন সড়কের অধিকাংশ স্থানে হাঁটুর ওপরে পানি ছিল। যার কারণে রাত ১১টার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। শত শত মোটরসাইকেল, সিএনজি-অটোরিকশা, কার ও মাইক্রোবাস রাস্তার পাশে আটকা ছিল।
যতরপুর এলাকার আব্দুল হান্নান বলেন, শনিবার রাতে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই যতরপুর এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে। এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়িতেও পানি ঢুকে পড়ে।
তিনি বলেন, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে এনিয়ে দুবার বাসায় পানি ঢুকল। সিলেটে সবচেয়ে বড় যন্ত্রণার নাম জলাবদ্ধতা।
এর আগে, গত ২৯ মে এক রাতের ঢলে তলিয়ে গিয়েছিল সিলেটের পাঁচ উপজেলা। পুরো জেলায় দেখা দিয়েছিল বন্যা পরিস্থিতি। তবে বন্যার পানি এখন কমে আসছে। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির মধ্যে এক সপ্তাহের মধ্যে দুবার ডুবল সিলেট নগরী।
সিলেট আবহাওয়া অফিস সহকারী আবহাওয়াবিদ শহা মো. সজিব জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ মিলিমিটার এবং ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর রাত ১২টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয় ৩৪ মিলিমিটার।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, ‘টানা বৃষ্টির কারণে কিছুক্ষণ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছিল। তবে বৃষ্টি থামলে সকাল হওয়ার আগেই পানি নেমে গেছে।’
এ ব্যাপারে সিসিকের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন দিলে রিসিভি করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দেওয়ার পরও কোনো উত্তর দেননি। তাই মেয়রের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।