বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪ ১৭:০১ পিএম
আপডেট : ০৯ জুন ২০২৪ ১৭:০৩ পিএম
কোরবানির ঈদ ঘিরে বগুড়ায় হাটে বাড়তে শুরু করেছে পশুর সরবরাহ। পশু বিক্রেতারা হাটে পর্যাপ্ত গরু নিয়ে এলেও ক্রেতা উপস্থিতি এখনও কম, ফলে জমে ওঠেনি বেচাকেনা। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে এবারে পশুর দাম কিছুটা বেশি। কিন্তু বর্ডার দিয়ে দেশে গরু প্রবেশ করলে বাজারে গরুর দাম কমে যাবে এবং এতে তাদের লোকসান গুনতে হতে পারে বলেও শঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (৮ জুন) সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নে ঘোড়াধাপ হাট ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
হাটে গতবারের চেয়ে বেশি গরু নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা৷ দেশি, শাহিওয়াল, ফ্রিজিয়ান, ক্রোস জাতের গরুর সংখ্যাই বেশি। তবে বড় আকারের গরু কম থাকলেও ছোট ও মাঝারি আকারের গরু বেশি দেখা গেছে হাটে। আকার ও ওজনভেদে এসব গরুর দাম হাঁকানো হচ্ছে ৮০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত।
গোকুল ইউনিয়নের পলাশবাড়ি দক্ষিণপাড়া গরু বিক্রেতা মোশারফ হোসেন, গত ঈদে খামারের সংখ্যা কম ছিল তাই ঈদের ২০ দিন আগে থেকে হাটে গরু কেনা বেচা হয়েছিল। কিন্তু এবার বগুড়ার খামারের সংখ্যা বেশি হওয়ার এবং অনলাইনে গরু কেনা বেচা হওয়ায় এখনও হাটে গরু নিয়ে আসছে না বিক্রেতারা। আরও তিন-চার দিন পর হাটে গরুর আমদানি বাড়বে।
রামশহর এলাকার রতন মিয়া নামে এক গরু বিক্রেতা বলেন, ল্যাম্পি রোগ হওয়ার কারণে হাটে গরু নিয়ে আসছে না বিক্রেতারা। যদি হাটে এসে ল্যাম্পি রোগ হয়, গরু বাসায় ফেরত গেলে ল্যাম্পি রোগে মৃত্যুও হতে পারে।
আব্দুর রহমান নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, অনেকের বাড়িতে জায়গা নেই। তাই তারা কোরবানির ঈদের এক দুইদিন আগে গরু কিনবেন। আর গো খাদ্যের দামও বেশি। তাই হাটে ক্রেতা তেমন আসছে না। আমরা আশা করছি ঈদের দুই তিনদিন আগে থেকে বিক্রি বাড়বে। বেশ কিছু ক্রেতা আসলেও দরদামে না হওয়ায় একটি গরুও বিক্রি হয়নি।
এদিকে খামারিরা জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর পশুখাদ্যের দাম বেড়েছে। প্রতিটি গরুর পেছনে খাবার বাবদ প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০০–৫০০ টাকা খরচ হচ্ছে। তাদের গরু লালনপালনের খরচও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় দাম পাওয়া নিয়ে তারা শঙ্কায় রয়েছেন। ঋণ নিয়ে তারা যে পশুপালন করছেন, সে খরচ উঠবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
ঘোড়াধাপ হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি কানাই লাল ময়না বলেন, গরুর আমদানি যেমন কমেছে তেমনি ক্রেতার সংখ্যাও কম। আর হাটে বেচাকেনা নেই বললেই চলে। এবার ক্রেতারা হাটের চেয়ে খামারের গরু কিনতে বেশি আগ্রহী। এরকম হলে আমাদের লোকসান ছাড়া কিছুই হবে না।
বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্র জানা গেছে, গত বছর বগুড়ায় ৪৪ হাজার ৩২৯ জন খামারি ছিলেন। এ বছর সেটি বেড়ে ৪৮ হাজার ৪৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের ৯৫ শতাংশই প্রান্তিক পর্যায়ের। জেলায় এবার কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪১৫টি। যা গত বছরের তুলনায় ৮ হাজার বেশি। কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে গরু ২ লাখ ৭০ হাজার ৪১ টি, ছাগল ৪ লাখ ২২ হাজার ৬৫৭টি, ভেড়া ও গারল ৩৯ হাজার ৮৫১টি এবং মহিষ ২ হাজার ২৬৬টি। এসব পশু এবার বগুড়া জেলায় চাহিদা পূরণ করেও ২৯ হাজার ১৫৫টি উদ্বৃত্ত থাকবে।
বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মোছা. নাছরীন পারভীন জানান, বগুড়ায় এ বছর খামারির সঙ্গে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা বেড়েছে। জেলায় এবার সবার চাহিদা মিটিয়েও প্রায় ৩০ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।