শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪ ১১:২৫ এএম
আহত শিক্ষক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রবা ফটো
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ফুল না দেওয়ায় এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে অভিভাবকের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৮ জুন) বিকালে কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নের কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে মিটিং চলাকালে ইউএনওর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওইদিন রাত ১২টার পর প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে কাপাসিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আহত শিক্ষক।
আহত শিক্ষক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি উপজেলার কপালেশ্বর গ্রামের ফাইজ উদ্দিন পালোয়ানের ছেলে এবং কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক।
অভিযুক্ত অভিভাবক বিল্লাল হোসেন উপজেলর সোহাগপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য। অপর সহযোগীরা হলেন একই উপজেলার নামিলা গ্রামের মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, কপালেশ্বর গ্রামের সোহেল রানা সাহেল, হাবিবুর রহমান এবং নাসির উদ্দিন রবিন।
কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম লুৎফর রহমান বলেন, ‘সভাপতি হিসেবে আমি ফুল প্রত্যাশা করিনি। তারপরও আামার সামনে অভিভাবক সদস্য বিল্লাল হোসেন সিনিয়র শিক্ষক মোজাম্মেল হককে পিটিয়ে আহত করেছে। পরে আমি দুপক্ষকে নিভৃত করার চেষ্টা করেও পারিনি। পরে কাপাসিয়া থান পুলিশের সহযোগীতায় পরিবেশ শান্ত করেছি।’
কাপাসিয়ার কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসাইন বলেন, ‘স্কুলের অভিভাবক সদস্য বিল্লাল হোসেন আমাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জন্য ফুলের ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন। আমি বলেছি, ইউএনও স্যারকে উপজেলায় ফুল দেওয়া হয়েছে। এরপরও ফুল দিতে চাপ দিলে আমি বুঝানোর চেষ্টা করেছি। শনিবার স্কুলে মিটিং চলাকালে বিল্লাল হোসেন ইউএনও স্যারের সামনে আমাকে গালি দেয়। এসময় শিক্ষক মোজাম্মেল হক এর প্রতিবাদ করে। পরে বিল্লাল হোসেন, সাবেক সভাপতি ও তার লোকজন শিক্ষক মোজাম্মেল হককে মারধর করে আহত করে ‘
আহত শিক্ষক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ‘শনিবার বিকালে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউএনও এ কে এম লুৎফর রহমানের উপস্থিতিতে ম্যানেজিং কমিটির মিটিং চলছিল। মিটিংয়ে অভিবাবক সদস্য বিল্লাল হোসেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসাইনকে গালি দেয়। আমি এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে বিল্লাল হোসেন ও তার চারজন সহযোগী আমার নাকে, মুখেসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাথারী কিল, ঘুষি মেরে আহত করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই বিল্লাল হোসেনের সহযোগী অজ্ঞাতপরিচয় ৩৫/৪০ জন বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে আমাকেসহ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসাইন ও ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যদেরকে সুযোগে পেলে যেকোনো সময় উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার হুমকি দেয়। তাদের হুমকি আহত শিক্ষকসহ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
অভিযুক্ত কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য বিল্লাল হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘যারা শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া দরকার।’