বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৪ ১৯:৩৯ পিএম
বাংলাদেশে সংস্কৃতি অঙ্গণের ঐত্যিবাহী সংগঠন বগুড়া থিয়েটারের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পাঁচ দিনব্যাপী নানা আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে থাকছে বড় ও ছোটদের নাটক, নাটকের গান এবং গল্প-আড্ডাসহ নানা আয়োজন।
রবিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের সেলিম আল দীন মঞ্চে থিয়েটার আড্ডার মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বর্ণিল আয়োজনের উদ্বোধন করা হবে। পরে একই মঞ্চে নাটকের গান ও নাটক- ‘নানা রঙের দিন’ মঞ্চস্থ হবে।
আয়োজকরা জানান, ওই একই মঞ্চে পর পর আরও দুই দিন যথাক্রমে কলেজ থিয়েটার, স্কুল নাটক এবং ভোর হলো সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়ের পরিবেশনার পাশাপাশি সেবামূলক কার্যক্রম এবং বগুড়া থিয়েটারের সাধারণ সম্পদাক তৌফিক হাসান ময়না রচিত নাটক ‘ফকির মজনু শাহ্’-এর চুড়ান্ত মহড়া প্রদর্শন করা হবে। এরপর ২ জুন ‘থিয়েটার আড্ডা’, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলার পুরস্কার বিতরণ এবং ৭ জুন বিকালে ‘আনন্দ পদযাত্রা’, শহীদ টিটু মিলনায়তনে ‘বগুড়া থিয়েটার পদক প্রদান’ এবং নাটক ‘ফকির মজনু শাহ্’ মঞ্চস্থ হবে।
বগুড়া থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না জানান, বাঙালি সংস্কৃতিকে লালনের পাশাপাশি তাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৮০ সালের ২৯ মে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বগুড়া থিয়েটারের পক্ষ থেকে দেশে-বিদেশে অন্তত ৬৫ নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। তার মধ্যে ‘কথা পুণ্ড্রবর্ধন’, ‘যে গল্পের শেষ নেই’, ‘সোনাভানের পালা’, ‘কৈবর্ত বিদ্রোহ’, ‘দ্রোহ’ ও ‘ফকির মজনু শাহ্’ অন্যতম। বগুড়া থিয়েটারের ভারতের কোলকাতায় বিভিন্ন সময় ১০টি নাটক মঞ্চস্থ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘কৈবর্ত বিদ্রোহ’, ‘দ্রোহ’, যুদ্ধ স্বাধীনতা’ ও ‘ভাগীদার’। এসবের পাশাপাশি বগুড়া থিয়েটারের উদ্যোগে প্রতি বছর ‘দুই বাংলার নাট্যোৎসব’ও আয়েজন করা হয়।
নাটকের পাশাপাশি বগুড়া থিয়েটার প্রতিষ্ঠার পর থেকে বগুড়ায় বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন থেকে সপ্তাহব্যাপী ‘বৈশাখী মেলা’ আয়োজন করে আসছে। যা এরই বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে বর্ষবরণের উপলক্ষ্য হয়ে উঠেছে। মেলায় গ্রামীণ সংস্কৃতির সব আয়োজন থাকে বলে বাঙালির অনেকের কাছে বগুড়া থিয়েটারের এই আয়োজন ‘মিলন মেলা’ হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। তাইতো প্রবাসে বসবাসকারী বাঙালিরাও বৈশাখী মেলার টানে প্রতি বছর বগুড়ায় ছুটে আসেন। বগুড়ার বৈশাখী মেলার ইতিহাস এরই মধ্যে বাংলা একাডেমির গ্রন্থেও অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।
বগুড়া থিয়েটারের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশীদ রাজা জানান, তারা সংস্কৃতিকে জনগণের সম্পদ মনে করেন। নানা সংকট ও সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বগুড়া থিয়েটার বাঙালির সংস্কৃতিকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি অব্যাহত রাখবে।
বগুড়ার প্রবীণ শিক্ষাবিদ বজলুল করিম বাহার মনে করেন, ৪৪ বছরে বগুড়া থিয়েটার এ অঞ্চলে সংস্কৃতি চর্চার একটি ঠিকানা হয়ে উঠেছে।