গোপালগঞ্জে ১৫টি গণ লাইব্রেরি স্থাপন

গোপালগঞ্জে এলজিএসপি-৩ ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)’র আওতায় জ্ঞান নির্ভর জাতি গঠনে ১৫টি গণ লাইব্রেরি স্থাপন করা হয়েছে। সব বয়সী পাঠক টানতে লাইব্রেরিতে করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও শিশু কিশোর কর্ণার। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রশাসনের প্রয়াস এটি।  

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারে রাখা হয়েছে সৃজনশীল ও জ্ঞান বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখার বই। শিশু কিশোরদের জন্য ব্যতিক্রমধর্মী ও আকর্ষণীয় কর্ণার করা হয়েছে। সেখানে শিশুতোষ সব গ্রহন্থের সমাবেশ ঘটানো হয়েছে। লাইব্রেরিগুলো সব বয়সের মানুষের জ্ঞান অন্বেষণে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এসব গণ লাইব্রেরি গড়ে তোলা হয়েছে। সরকারের এডিপি ও এলিএসপি-৩ প্রকল্পের অর্থায়নে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুর রহমান ২১টি ইউনিয়নে ২১টি গণ লাইব্রেরি স্থাপনের উদ্যোগ নেন। প্রথম পর্যায়ে তিনি ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ১৫টি লাইব্রেরি স্থাপন করেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এসব লাইব্রেরি পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এডিপির টাকায় লাইব্রেরির ভবনগুলো নির্মাণ করা হয়।

এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের গোপালগঞ্জ জেলার ডিএফ মো রুকুনুজ্জামান বলেন, ১৪টি লাইব্রেরিতে আমরা সেলফ ও বই ক্রয়ের জন্য ২ লাখ করে ২৮ লাখ টাকা ও গোবরা ইউনিয়ন লাইব্রেরিতে ১ লাখ টাকাসহ মোট ২৯ লাখ টাকা এলজিএসপি-৩ প্রকল্প থেকে দিয়েছে। এখানে বেশ ভালো কাজ হয়েছে। সেলফ ও বই দিয়ে লাইব্রেরিগুলোকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। এখানে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও শিশু কিশোর কর্ণার রাখা হয়েছে। লাইব্রেরিগুলো পাঠক টানছে। উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।

লাইব্রেরি নির্মাণের উদ্যোক্তা রাশেদুর রহমান বলেন, ‘জ্ঞান নির্ভর জাতি গঠনের লক্ষে ২১ ইউনিয়নের মধ্যে আমরা ১৫টি ইউনিয়নে গণ লাইব্রেরি স্থাপন করেছি। আরও ছয়টি ইউনিয়নে ছয়টি লাইব্রেরি করে দেওয়া হচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে মাদক ও মোবাইল আসক্তি মুক্ত করতে চাই। এ ছাড়া তাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতেই আমাদের এ প্রয়াস। এ প্রয়াস সফল হলে আমরা জ্ঞান নির্ভর সমাজ গঠনের পথে এগিয়ে যাব।’

লাইব্রেরিতে আসা শিক্ষার্থী সিয়াম শেখ ও আকতার হোসেন নান, লাইব্রেরি আমাদের জানার আকাঙ্খাকে প্রসারিত করেছে। এখানে এসে আমরা অবসরে বই পড়ি। বই পড়ে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারছি। লাইব্রেরিতে পড়াশোনার জন্য জ্ঞান অর্জন করতে পারছি।

পাঠাক মোমরেজ গাজী বলেন, এখানে সৃজনশীল, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বইসহ বিভিন্ন ধরণের বই রয়েছে। এখানে প্রাজনীয় সব বই পাওয়া যায়। এসব বই পড়ে আমরা জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে পারছি। এতে আমরা যেমন উপকৃত হচ্ছি, তেমনি জ্ঞান নির্ভর সমাজ গঠনে এটি ভূমিকা রাখছে।

গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বই একজন মানুষকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পাড়ে। আলোকিত মানুষের আলো পুরো সমাজকে আলোকিত করবে। এভাবেই একদিন সমাজ থেকে সমস্ত অন্ধকার দূর হয়ে যাবে।’

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘এ লাইব্রেরি স্থাপন করার প্রথম উদ্দেশ্য হলো প্রজন্ম তৈরি করা। এটি প্রতিকী হিসাবে কাজ করবে। আগামীতে জেলার সব ইউনিয়নে এ ধরণের লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা হবে।’

প্রবা/ইউরি