ঢাকা থেকে নাগরিক সাংবাদিক জিয়াউল জিয়া
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩ ১৫:৩৪ পিএম
ঢাকা-১৭ উপ নির্বাচনে জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী কাজী মো. রাশিদুল হাসান রাশেদ। ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা -১৭ আসনের অলিগলিতে তার বেড়ে ওঠা। স্কুল, কলেজ থেকে পেশা ও রাজনীতি-সবই তার ঢাকা ১৭ আসন কেন্দ্রিক। গত কয়েক দশক তার পরিবার মধ্যঢাকার রাজনীতিতে ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ির তৃতীয় প্রজন্ম দাদা-নানার মতই এ আসনের সর্ব সাধারণের আশা ভরসা নিয়ে তাদের জন্য কাজ করতে চায়। মুক্তিযোদ্ধা পিতার সন্তান, জাকের পার্টির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কাজী মো. রাশিদুল হাসান রাশেদ ইতিমধ্যে পার্টির মনোনয়ন পেয়ে শুরু করেছেন নির্বাচনী প্রচারণা। গোলাপ ফুল মার্কার এ প্রার্থী সব ঠিক থাকলে নিজের বিজয়ে শতভাগ আশাবাদী । ১৯৯৭ সালে স্কুল জীবনের শেষ দিকে জাকের পার্টি ছাত্রফ্রন্টের যখন শুরু তখন থেকে তার রাজনীতি শুরু। তবে পারিবারিকভাবে শিশু বয়স থেকে ফরিদপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে নিয়মিত যাতায়ত ছিল ।
বাবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আধ্যাত্মিকতার চর্চায় দেখেছেন মানুষের সেবা ও মুক্তির ইচ্ছা। সমাজে সম্প্রীতির বন্ধনের শিক্ষা আমার পারিবারিক এবং রাজনৈতিক। তার দল যে আদর্শিক রাজনীতি করে, সেই ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার ইশতেহার পৌঁছে দিতে চাই প্রতিটি প্রাণে ।
ঢাকা-১৭ উপ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে তুলনামূলক তরুণদের সংখ্যা বেশি। আধুনিক ও সময় উপযোগী ঢাকা বিনির্মাণে সবার আছে নিজস্ব মতামত ও চিন্তা। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে তরুণ তুর্কি, জাকের পার্টির সঙ্গে তার শুরুটা জানতে চাইলে জাকের পার্টির বনানী অফিসে বসে কাজী মো. রাশিদুল হাসান রাশেদে বলেন, ‘জন্মের পর থেকে রাজনীতি দেখেছি, চোখের সামনে বাবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আধ্যাত্মিকতার চর্চা দেখছি। এ কারণে আমার দেখার জায়গাটা ভিন্ন মনে হয় আমার, গত ২৬ বছর জাকের পার্টি সাথে আছি। সেই স্কুল জীবন থেকে বাবার হাত ধরে আটরশিতে যেতাম। এখন সেই বৃহত্তর পরিবারের একজন সদস্য আমি। ফরিদপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের সঙ্গে আমার যোগাযোগ পারিবারিক আর শুরুটা জন্মের পর থেকে।‘
রাজনীতির গুণমান নিয়ে আপনার দলের সিনিয়ররা নানা বক্তব্য দিয়ে থাকেন, কেমন গুণগত মানের চিন্তা করে আপনার পার্টি ? এ প্রশ্নের উত্তরে রাশিদুল হাসান রাশেদ বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোস্তফা আমীর ফয়সল সাহেবের একটা উক্তি দিয়ে শুরু করি। ২০১৮ সালে কোন এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, কর্ম, চিন্তা, কল্পনা, শ্রবণ, দর্শনের পবিত্রতা নিয়ে রাজনীতি করতে হবে, এই ৫ টি ইন্দ্রিয়ের পবিত্রতা ছাড়া যেমন স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ করা যায় না তেমনি দৈহিক ও রাজনৈতিক পবিত্রতা আসে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকল কট্টরপন্থার ঊর্ধ্বে রাজনীতি করে জাকের পার্টি। চিন্তা চেতনা ও চর্চায় দেশের যে কোন রাজনৈতিক দলের থেকে বেশি গণতান্ত্রিক ও উদারপন্থি। গুণগত মান বলতে, আমাদের প্রতিটি পার্টি সদস্য যে শুদ্ধ চর্চা করে সামাজিক ভাবে তা সংক্রামিত হলে, বিশ্বাস করি এমন বৈষম্যময় সমাজের কাঠামো পাল্টাবে।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপ নির্বাচনে আপনার সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো স্থানীয়। পারিবারিক ধারাবাহিকতা দেখলে ১৭ আসনের জনগণের সাথে আমাদের সম্পর্ক স্বাধীনতার পূর্ব থেকে এবং বৃহত্তর ঢাকার রাজনীতিতেও আমাদের পারিবারিক অবদান অনেক। সবসময় দেখবেন ১৭ আসনের জনগণ কখনওই তাদের নিজেদের মানুষকে নেতা হিসেবে পায় নাই। একজন বাইরের মানুষ কতটুকুই বুঝতে পারেন বা মানুষের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারেন। আমি এই ১৭ আসনের মাঠে খেলে বড় হয়েছি, এখানের প্রতিটি সীমাবদ্ধতার সাথে সম্পৃক্ত এমনকি প্রতিটি সম্ভবনার বিষয়ে ওয়াকিবহাল। জনগনের তাদের নিজেদের বলতে আমাকে চায় । তারা তাদের সন্তানের সঙ্গে আছেন।’
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে ঢাকা ১৭ আসন কেমন দেখবো প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য ও গণশিক্ষা নিয়ে আলাদা প্লান করেছি। আপনারা জানেন ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনের মধ্যে সমাজের সকল স্তরের নাগরিকের বাস। করাইল বস্তি থেকে বড় শিল্প উদ্যোক্তা সবার জন্য ভাবতে হচ্ছে, যেমন কর্পরেট হাব আছে তেমন কূটনৈতিকও আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ আসনে আছে অনেক গুলো সরকারি হাসপাতাল। চেহারা পাল্টে দিতে চাই এ আসনের সকল সেবা প্রদানকারী সরকারী প্রতিষ্ঠানের। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে কর্মকালীন সময়ে সড়কে গতি বাড়াতে চাই। আমার আসনে বাতাসের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা অসহনীয় থাকে। শুধু মুখে পরিবেশ বান্ধব না, স্ট্রাকচারাল হতে হবে। পরিবেশ বান্ধব সামগ্রী ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি নাগরিকের হাতে তুলে দিয়ে, সবাই একসাথে মিলে সামাজিক আন্দোলনের মত হয়ে উঠবে পরিবেশ বান্ধব আগামীর ঢাকা ১৭ আসন। এছাড়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে নাগরিকের নাকে বর্জ্য জমে থাকার দুর্গন্ধ না লাগে। সকাল হবে অমলিন ও ফ্রেস, অফিস বা স্কুল যাত্রা হবে মৃদু ও মনোরম; নাগরিকের যাপনের যাতনা কমানোর চেষ্টা থাকবে।’
শুধু মাত্র আর্দ্রতা এবং তাপামাত্রা নিয়ন্ত্রনে জাপানের একটা টেকনোলজি নিয়ে ঢাকায় কাজ করার আগ্রহও আছে তার।
তিনি বলেন, “আত্মিক শান্তি এবং মনস্তাত্ত্বিক সুখে মানুষকে রাখতে হলে, বেঁচে থাকার একটা নির্মল ও সুন্দর কাঠামো লাগবে। নেপালে প্রচলিত একটি কথা ‘গ্রোস ডমিস্টিক হ্যাপিনেস’ আমার মাথায় এটা অনেকদিন ধরেই ঘুরছে। নাগরিকের জন্য সামগ্রিক সুখে বেঁচে থাকার একটা রূপরেখা তৈরি ও বাস্তবায়ন করা আমার লক্ষ্য, সেখানে সরকারি সেবা হবে সন্মানজনক।”
জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ঢাকা ১৭ আসনের সন্তান আমি। যত বেশি ভোটাররা জানতে পারছে আমি নির্বাচন করছি তাঁদের উপস্থিতি বাড়ছে। প্রপার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পেলে আমার জয় নিশ্চিত। আমি শতভাগ আশাবাদী। আর একটা কথা, আর যদি এমপি হিসেবে জনগণের পাশে নাও থাকতে পারি, মানুষ হিসেবে দায়িত্ববান নাগরিক হিসেবে আমি আমার মানুষের সঙ্গে থাকবো।’