ঢাকা থেকে নাগরিক সাংবাদিক জিয়াউল জিয়া
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৩ ১৮:১৮ পিএম
আপডেট : ১৭ মে ২০২৩ ১৫:২৯ পিএম
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সভায় বক্তারা। ছবি : সংগৃহীত
কিশোর কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য ও সেবা পাওয়া অধিকার নিশ্চিতকরণে ২০২১ সাল থেকে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের নির্ধারিত ২০টি কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভলান্টিয়ার পিয়ার লিডার মডেলটির সংযুক্ত করে সিরাক-বাংলাদেশ।
চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত চার জেলার এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবাগ্রহণকারী কিশোর-কিশোরীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ হাজার।
এছাড়া, ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে কেন্দ্রগুলোর আশেপাশের এলাকা ও বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীর মধ্যেও কৈশোর-বান্ধব প্রজনন ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তাই কিশোর-কিশোরীদের সেবার মান বজায় রাখতে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি ও স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট জন।
সোমবার (১৫ মে) রাজধানীর কাওরানবাজারের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভায় বক্তারা এ দাবি জানান।
কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক জাতীয় পর্যায়ের এই মতবিনিময় সভা আয়োজন করে সিরাক বাংলাদেশ। আয়োজক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এস এম সৈকতের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের এমসিএইচ সার্ভিসেস পরিচালক ও লাইন ডাইরেক্টর (এমসি-আরএএইচ) ডা. মো. মাহমুদুর রহমান। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘তরুণদের মধ্যে যারা সেবা গ্রহণ করতে এসেছে তাদের উপকারিতাসমহৃহ তুলে ধরে সেবা প্রদানের মান আরও বৃদ্ধি করতে হবে।’
এছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে কাউন্সিলর নিয়োগের পাশাপাশি নিয়মিত কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা রাখা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ‘পঞ্চম সেক্টর প্লানের অপারেশন প্লানে কিশোর-কিশোরদের মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারী সংস্থার ও অধিদপ্তরের সমন্বয় করার মাধ্যমে প্রকল্পের স্থায়ীকরণের বিষয়ে গুরুত্ব দেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আব্দুস সালাম খান।
পরিবার পরিকল্পনার বিভাগীয় পরিচালক ও যুগ্ম সচিব মো. মাহাবুব আলম বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে কাউন্সিলর টিম গঠন করার মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রতিটি এলাকায় কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সেবা প্রদান করা যেতে পারে। সরকারি জনবলের মাধ্যমে স্কুল-কলেজের স্বাস্থ্য বিষয়ক টিম গঠন ও শিক্ষকদের সংযুক্ত করে কাজ করতে এবং এই উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিতে মহৃল দায়িত্ব গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’
আইইএম পরিচালক ও লাইন ডাইরেক্টর (আইইসি) আবদুল লতিফ মোল্লা বলেন, ‘কিশোর-কিশোরীদের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্যারা কাউন্সেলর তৈরী করা এবং কিশোর-কিশোরীদের ডিজিটালি কানেক্ট করতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সঙ্গে সিরাক-বাংলাদেশের সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।’
প্রকল্পের সফলতা প্রসঙ্গে এস এম সৈকত বলেন, ‘দুই বছর মেয়াদী এই প্রকল্পটির সফলতা থেকে অভিজ্ঞতা গ্রহন করে সামনে এগিয়ে যেতে ডকুমেন্টেশন তৈরি করা হবে। এই ডকুমেন্টশনের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সঙ্গে পঞ্চম সেক্টর প্লান এ প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করা হবে।’
এ সময় তিনি তরুণ ও কিশোর কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে প্রযুক্তির সর্বাÍক ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহনের আহ্বান জানান।
সভার শুরুতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিরাক বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অফিসার সংগীতা সরকার।
তিনি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা জেলার ২০টি কৈশোর-বান্ধব সেবাকেন্দ্রের বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন।
যেখানে কিশোরদের সেবার মান বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় এবং প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করার দাবি জানানো হয়েছে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, সিসিএসডিপি লাইন ডিরেক্টর নুরুন নাহার বেগম, আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিভাগ জনস হপকিংস স্কুল অফ পাবলিক হেলথের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডা. হালিদা হানুম আক্তার, পরিবার পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ ডাঃ জেবুন নেছা রহমান, পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল ঢাকার অ্যাডোলেসেন্ট এন্ড ইয়ুথ স্পেশালিষ্ট ডাঃ ফাতেমা শবনম, পরিবার পরিকল্পনার ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল, মিরপুর মাতৃ ও গিু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান পরিচালক ডা. মো. শামছুল করিম।
উল্লেখ্য, পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় ইউএসএইড সুখী জীবন প্রকল্পের অধীনে সিরাক বাংলাদেশ ২০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিচালনা করছে।