× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

একটি অবহেলিত ভূখণ্ড ও সংসদীয় আসনের ইতিকথা

কুমিল্লা থেকে নাগরিক সাংবাদিক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান

প্রকাশ : ০২ মে ২০২৩ ১৬:৩৪ পিএম

আপডেট : ০২ মে ২০২৩ ১৬:৩৬ পিএম

মেঘনা উপজেলার ম্যাপ। সংগৃহীত ফটো

মেঘনা উপজেলার ম্যাপ। সংগৃহীত ফটো

কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলা। ভৌগলিকভাবে মূলত এটি একটি দ্বীপ উপজেলা। চারপাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে মেঘনা ও গোমতী নদী। এই উপজেলার ইতিহাস না জানা মানুষের কাছে তা এখনও অজানা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই চিত্র কিছুটা বদলেছে। উপজেলাটি গঠিত হয় ১৯৯৮ সালে। পরিধি ছিল দাউদকান্দির দুইটি এবং হোমনা উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে। বর্তমানে ইউনিয়নের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আটটিতে। দুই নদী বিধৌত এই দ্বীপ উপজেলার আরও অজানা কিছু তথ্য তুলে ধরব। যেখানে জড়িয়ে আছে স্থানীয়দের আশা-আকাঙ্খা, আবেগ, আক্ষেপ ও ক্ষোভ।

কয়েক দশক পেছনে ফিরে যাই। ১৯১৮ সাল। ব্রিটিশ শাসিত ভারত ভূখণ্ডের কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠিত হয় হোমনা উপজেলা। পাকিস্তান আমল শেষে দেশ স্বাধীন হলো। স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদ নির্বাচনে (১৯৭৩ সাল) সংসদীয় আসন হোমনার সঙ্গে যুক্ত ছিল মেঘনা। সেই সময় থেকে অষ্টম জাতীয় সংসদ পর্যন্ত (২০০১ সাল) তা অব্যাহত ছিল। এ নিয়ে কোনো রকম আক্ষেপ ছিল না মেঘনাবাসীর। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের (২০০৮ সাল) আগে এটিকে যুক্ত করা দাউদকান্দি উপজেলার সঙ্গে। মেঘনা উপজেলার কোনো বাসিন্দা এটা চেয়েছেন কি না, জানা নেই।

সংসদীয় আসনটির আসন বিন্যাস :

সদ্য স্বাধীন দেশ। প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন (১৯৭৩ সাল)। হোমনা-দাউদকান্দির একাংশ (বর্তমান মেঘনার ৪ ইউনিয়ন) নিয়ে গঠিত আসন থেকে লড়েন মুজাফ্ফর আলী। আওয়ামী লীগের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। দ্বিতীয় নির্বাচনে (১৯৭৯) বিএনপি থেকে সংসদের টিকিট নিশ্চিত করেন মর্তুজা হোসেন মোল্লা। তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে (১৯৮৬ ও ১৯৮৮) সমীকরণ পাল্টে যায়। জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট মোবারক আলী। পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন বিএনপির এম কে আনোয়ার। এরপরই শুরু হয় ৩৭ বছরের ঐতিহ্য মুছে ফেলার প্রয়াস। স্থানীয়দের আকাঙ্খার বিপরীতে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই সংসদীয় আসনের সীমারেখা পূণনির্ধারন করা হয়। নতুন সীমানায় মেঘনার (দাউদকান্দির একাংশ ও হোমনার একাংশ) সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় দাউদকান্দিকে। নতুন সীমানা নির্ধারিত সংসদীয় আসনটি থেকে টানা নবম, দশম ও একাদশ (২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮) জাতীয় সংসদের টিকিট নিশ্চিত করেন আওয়ামী লীগের মেজর জেনারেল (অবঃ) সুবিদ আলী ভূঁইয়া।

জনআকাঙ্খার বিরুদ্ধাচরণ :

হোমনার সঙ্গে মেঘনা দুই যুগেরও বেশি সময় সংসদীয় আসন ছিল। ভৌগলিকভাবেও মেঘনার সঙ্গে হোমনার সংযুক্ত সীমানা বেশি। ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষি আবাদ, আত্মীয়তার বন্ধনও যুগ-যুগের। মেঘনাবাসীর আইনি নিরাপত্তায় অবস্থিত পুলিশ সার্কেল হোমনায়। খাদ্য গুদামও হোমনায়। অথচ জনআকাঙ্খা বিকিয়ে দিয়ে ২০০৮ সালে সংসদীয় আসন হিসেবে মেঘনাকে সংযুক্ত করা হয় দাউদকান্দির সঙ্গে।

নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ :

আসনটির পূর্বের সীমানা নির্ধারনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে (২০১৮) জোর চেষ্টা চালান মেঘনা উপজেলার তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি। জনআকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে নির্বাচন কমিশনও সিদ্ধান্ত নেয়। প্রকাশিত হয় খসড়া গেজেট। কিন্তু বাস্তবায়িত হয়নি। স্বার্থান্বেষী মহলের তৎপরতায় সিদ্ধান্ত পাল্টায় নির্বাচন কমিশন। চূড়ান্ত গেজেটে ২০০৮ সালের অবস্থানে ফিরে যায় কমিশন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একই মহলের তৎপরতায় ২০০৮ সালে নির্ধারিত সংসদীয় সীমানার খসড়া গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। মেঘনা-হোমনাবাসী এই সিদ্ধান্তের পরিবর্তন চায়। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। 

আশা করছি, সুচিন্তিত রায়ে জনআকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাবে নির্বাচন কমিশন। স্বাধীনতার পর পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের বিন্যাস করা মেঘনা-হোমনা আসনটির সংসদীয় এলাকা পূনর্বহাল করা হবে; যা স্বাধীনতা পরে ৩৭ বছর পর্যন্ত বলবৎ ছিল।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা