প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩৮ পিএম
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৫৪ পিএম
সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে এবং অনলাইনে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে শেয়ারবাজার কারসাজি করা একটি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. আমির হোসাইন ওরফে নুরনুরানী, নুরুল হক হারুন ও আব্দুল কাইয়ুম।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের (দক্ষিণ) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সাইফুর রহমান আজাদের নেতৃত্বে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি জানায়, গ্রেপ্তাররা আগে থেকেই সরকারবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত। গ্রেপ্তার আমির হোসাইনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দমন আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা রয়েছে। তারা পুঁজিবাজার ধ্বংস করতে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), কমিশনের চেয়্যারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে গ্রুপ খুলে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে আসছিল।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘পুঁজিবাজার স্পর্শকাতর জায়গা। এখানে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের সর্বস্ব নিয়ে এসে বিনিয়োগ করেন। অল্পতেই এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে। একটি স্বার্থান্বেষী চক্র মিথ্যা তথ্যে বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করে আসছিল, এমন অভিযোগে বিএসইসি রমনা থানায় একটি মামলা করে। মামলা তদন্তের ধারাবাহিকতায় ডিবি তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।‘
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তাররা মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর জন্য ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামে গোপনীয় গ্রুপ ব্যবহার করে। এসব গ্রুপে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে আসছিল। নানা ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আগেভাগে প্রকাশ করে দেয়, যা বেশিরভাগ সময় বানোয়াট ও মিথ্যা। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ডিবিপ্রধান বলেন, তারা বিভিন্ন সময় আন্দোলনের নামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে রাস্তা দখল করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে সেসব কোম্পানি সম্পর্কে অনলাইনে অপপ্রচার শুরু করে। এমনকি কোম্পানির অফিসগুলোতেও হামলা করে।
তারা বিভিন্ন শেয়ার নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দাম বৃদ্ধি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে। এসব করার জন্য গোপনীয় গ্রুপ ব্যবহার করে আসছিল। এসব গ্রুপের সদস্যদের একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে গ্রুপে যুক্ত হতে হয়। আবার শেয়ারে প্রফিট হলে লভ্যাংশ অংশ দিতে হয়। কিন্তু লোকসান হলে তারা দায়িত্ব নেয় না।
গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রে জড়িত অন্যদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে যাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য আমাদের নজরদারি অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
এডিসি সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, গ্রেপ্তার আমির হোসাইন ছদ্মনাম নুরনুরানি ব্যবহার করে গ্রুপগুলো পরিচালনা করত। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে সব মিলিয়ে ৮ থেকে ১০টি গ্রুপ চালায়। নুরুল হক হারুন বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি পরিচয়ে বিভিন্ন সদস্যকে একত্রিক করে কোম্পানিগুলোতে চাঁদাবাজি করে। আব্দুল কাইয়ুম রয়েল ক্যাপিটাল নামক ব্রোকারেজ হাউসের সঙ্গে যুক্ত। তিনি হোয়াটসঅ্যাপ এবং টেলিগ্রাম গ্রুপে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন শেয়ার সম্পর্কে তথ্য প্রদান করত।