প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:১৩ পিএম
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৯ পিএম
রাজধানীর গুলশান–২ নম্বরের ক্যাফে সেলেব্রিটা বারের সামনে তিন নারী মিলে এক নারীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। প্রবা ফটো
রাজধানীর গুলশান–২ নম্বরের ক্যাফে সেলেব্রিটা বারের সামনে তিন নারী মিলে এক নারীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বাহিনীটি বলছে, গ্রেপ্তাররা পহেলা বৈশাখের রাতে অতিরিক্ত মদ পান করে মারামারিতে জড়ান। আর যাকে মারধর করা হয় তিনিও ছিলেন মদ্যপ। তাদের কারোই মদ পানের লাইসেন্সও নেই। তাই তাদের কাছে অবৈধভাবে মদ বিক্রি করায় বার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।
গ্রেপ্তাররা হলেন, শারমিন আক্তার মিম, ফাহিমা ইসলাম তুরিন ও নুসরাত আফরিন।
হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘এই নগরীতে বাস করতে গেলে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। কোনো পুরুষ বা নারীর যদি লাইসেন্স থাকে তাহলে তারা বারে মদ পান করতে পারে। এতে আইনগত কোনো বাধা নেই। কিন্তু গত পহেলা বৈশাখের রাতে গুলশানের মতো একটি এলাকা, যেখানে অভিজাত পরিবারের বসবাস; সেখানে তারা মদ পান করেছেন। তাদের কারও কোনো লাইসেন্স ছিল না।’
লাইসেন্সহীন কারও কাছে বার কর্তৃপক্ষ মদ বিক্রি করতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের (বার কর্তৃপক্ষ) উচিত ছিল এই সকল নারীর মদ লাইসেন্স পরীক্ষা করা। এমনকি এই নারীদের কাছে অতিরিক্ত পরিমাণে মদ বিক্রি করেছেন; যা পান করে মাতাল, বেসামাল হয়ে গেলেন। বারের লোকজনের উচিত ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণ করা।’
হারুন-আর-রশীদ আরও বলেন, ‘এই নারীরা বার থেকে বের হয়ে রাস্তায় গিয়ে প্রকাশ্যে মারামারিতে জড়ালেন, যা গুলশানের বাসিন্দারা দেখলেন। তারা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ এই ভিডিও দেখে ভাববে শহরের রাস্তায় নারীরা মাতলামি করবে, মারামারি করবে; এটা কোনো অভিভাবকই মেনে নিতে পারবে না। এই নারীরা কারও না কারও সন্তান। তাদের অভিভাবকদের উচিত মেয়েরা কোথায় যায়, কী করে সেদিকে খেয়াল রাখা। আজকে এই নারীরা বারে গিয়ে মদ পান করে এমন কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন। যে মেয়েকে তারা মেরেছে সেই মেয়েটিও মাতাল ছিল।’
মারধরের শিকার নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘যে বারগুলো লাইসেন্স ছাড়া মদ বিক্রি করেছে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেব।’
ভুক্তভোগী নারীর ভাষ্য
মারধরের শিকার রিতা আক্তার সুস্মি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ও আমার এক বন্ধু মিলে খাবার খেতে ওই রেস্তোরাঁয় যাই। খাওয়ার একপর্যায়ে টয়লেটে যাওয়ার জন্য গিয়ে দেখি চারজন মেয়ে একসঙ্গে টয়েলেটে প্রবেশ করেছে। বিষয়টি রেস্তোরাঁর ম্যানেজারকে বলি। তারা মেয়েদের বের করে দেয়। পরবর্তীতে আমি রেস্তোরাঁ থেকে বের হওয়ার সময় তারা আমার ওপর হামলা করে।’
এ ঘটনার বিচার চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে চড়-থাপ্পড় দিতে পারত। কিন্তু রাস্তার মধ্যে আমার কাপড় খুলে ফেলে। আমাকে মারধর করে। আমি তাদের সঠিক বিচার চাই। কারণ রাস্তায় একজন মেয়ে হয়ে আরেকজন মেয়ের কাপড় খুলে ফেলতে পারে না।’