প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৩৭ এএম
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১০:২১ এএম
ছবি : সংগৃহীত
খোলা প্রাঙ্গণে প্রকৃতির সান্নিধ্যে, নতুন প্রভাতের নতুন আলোয় বঙ্গাব্দের ১৪৩১ সালকে বরণ করে করলো সংস্কৃতি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান ছায়ানট। সম্প্রীতির সাধনায় নিমগ্নতার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয় অনুষ্ঠানে।
রবিবার (১৪ এপ্রিল) বৈশাখের প্রথম প্রভাতে আহীরভৈরব রাগে শিল্পী মর্তুজা কবির মুরাদের বাঁশির সুরে শুরু হয় রাজধানীর রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।
পরে ছায়ানটের শিল্পীরা সম্মেলক কণ্ঠে শোনান ‘আঁধার রজনী পোহালো।’
একক কণ্ঠে ‘বিমল আনন্দে জাগো রে’ শোনান সত্যম্ কুমার দেবনাথ এবং তানিয়া মান্নান শোনান ‘তোমার সুর শুনায়ে।’
প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে সাজানো হয় দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানমালা। শেষ হয় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
এবার আয়োজনে সম্মেলক গান ১১টি, একক গান ১৫টি এবং পাঠ ও আবৃত্তি।
ছায়ানটের নববর্ষের কথন বলা হয়, ‘পরাধীন আমলে, আপন সংস্কৃতিতে বাঁচবার সাহস যোগাতে বাংলা নববর্ষে শুরু হয়েছিল বাঙালিরচিরকালীন সুরবাণীর এই আয়োজন। স্বাধীন দেশে বাঙালির নতুন সংকল্প: আপন সংস্কৃতি অন্তরে ধারণ করে পূর্ণ মানব হয়ে ওঠা; আপন সত্তাকে জাগ্রত রেখে, শিক্ষিত ও সংস্কৃতি-সচেতন মানবিক জনপদ গড়ে তোলা। কিন্তু আজ, ভোগবাদ ও রক্ষণশীলতার দাপটে আমরা নতুন সংকটের সম্মুখীন। হারাতে বসেছি বাঙালির স্বাভাবিকতা। আলগা হয়ে পড়ছে পারস্পরিক সম্প্রীতির বাঁধন। বিস্তার ঘটছে লোভ এবং স্বার্থপরতার। চেনা মানুষও হয়ে উঠছে অচেনা। তৈরি হচ্ছে এক অস্বাভাবিক এবং অসহিষ্ণু সমাজ।’
এতে আরও বলা হয়, ‘অমানবিক এই অস্বাভাবিকতা থেকে বেরোতে হবে। নইলে বাঙালির প্রাণপ্রিয় এই নববর্ষ উদযাপনও হয়ে পড়বে, কেবল একটি দিনের জন্য বাঙালি সাজবার উপলক্ষ্য। আজ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দের প্রথম প্রভাতের সুরবাণী ‘আঁধার রজনী পোহালো, জগত পুরিল পুলকে নববর্ষের নবীন আলোয়, নবীন আশায়, নবজীবন লাভ করে সকলে যেন স্বাভাবিকতায় ফিরি এবং সম্প্রীতির সাধনায় নিজেদের নিমগ্ন করি—এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা । শুভ নববর্ষ।’
ঢাকার রমনা উদ্যানে দুই ঘণ্টাব্যাপী এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। দেখা যায় ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও (www.chhayanaut.comdigitalplatformchhayanaut)
ষাটের দশকে পাকিস্তানীদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে রমনার বটমূলে যে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা করেছিল ছায়ানট, এখন তা বাঙালির নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম প্রধান অনুসঙ্গ।